পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> 0 চারিত্রপূজা র্তাহার প্রধান কীৰ্ত্তি বঙ্গভাষা। যদি এই ভাষা কখনো সাহিত্যসম্পদে ঐশ্বৰ্য্যশালিনী হইয় উঠে, যদি এই ভাষা অক্ষয় ভাবজননীরূপে মানবসভ্যতার ধাত্রীগণের ও মাতৃগণের মধ্যে গণ্য হয়, যদি এই ভাষা পৃথিবীর শোকদুঃখের মধ্যে এক নূতন সান্থনাস্থল—সংসারের তুচ্ছতা ও ক্ষুদ্র স্বার্থের মধ্যে এক মহত্ত্বের আদর্শলোক, দৈনন্দিন মানবজীবনের অবসাদ ও অস্বাস্থ্যের মধ্যে সৌন্দর্য্যের এক নিভৃত নিকুঞ্জবন রচনা করিতে পারে, তবেষ্ট তাহার এই কীৰ্ত্তি র্তাহার উপযুক্ত গৌরব লাভ করিতে পরিবে । বাংলাভাষার বিকাশে বিদ্যাসাগরের প্রভাব কিরূপ কাৰ্য্য করিয়াছে, এখানে তাহা স্পষ্ট করিয়া নির্দেশ করা আবশুক । বিদ্যাসাগর বাংলাভাষার প্রথম যথার্থ শিল্পী ছিলেন । তৎপূৰ্ব্বে বাংলায় গদ্যসাহিত্যের সূচনা হইয়াছিল, কিন্তু তিনিই সৰ্ব্বপ্রথমে বাংলাগদ্যে কলানৈপুণ্যের অবতারণা করেন । ভাষা-যে কেবল ভাবের একটা আধারমাত্র নহে, তাহার মধ্যে যেন-তেন-প্রকারেণ কতকগুলা বক্তব্যবিষয় পূরিয়া দিলেই যে কৰ্ত্তব্যসমাপন হয় না, বিদ্যাসাগর দৃষ্টান্তদ্বারা তাহাই প্রমাণ করিয়াছিলেন। তিনি দেখাইয়াছিলেন যে, যতটুকু বক্তব্য, তাহ সরল করিয়া, সুন্দর করিয়া এবং সুশৃঙ্খল করিয়া ব্যক্ত করিতে হইবে। আজিকার দিনে এ কাজটিকে তেমন বৃহৎ বলিয়া মনে হইবে না, কিন্তু সমাজবন্ধন যেমন মনুষ্যত্ববিকাশের পক্ষে অত্যাবগুক, তেমনি ভাষাকে কলাবন্ধনের দ্বারা সুন্দররাপে সংযমিত না করিলে, সে ভাষা হইতে কদাচ প্রকৃত সাহিত্যের উদ্ভব হইতে পারে না । সৈন্যদলের দ্বারা যুদ্ধ সম্ভব, কেবলমাত্র জনতার দ্বারা নহে ;–জনতা নিজেকেই নিজে খণ্ডিত-প্রতিহত করিতে থাকে, তাহাকে চালনা করাই কঠিন । বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যভাষার উচ্ছ,জ্বল জনতাকে সুবিভক্ত, সুবিন্যস্ত,