পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর *〉 বৃক্ষছায়ার অবকাশ নেই প্রায় কোথায়ও ; সেই উষর রুক্ষ প্রাস্তরের মধ্যে, আজকাল যেটা অতিথিশালা, তারই একটা ছোটো ঘরে আমি “থাকতুম, অন্তটাতে তিনি থাকতেন। তার রোপণ-করা শাল-বীথিক তখন বড়ো হোতে আরম্ভ করেছে । তখন আমার কবিতা লেখার পাগলামে তার আদিপৰ্ব্ব পেরিয়েছে ; নাট্যঘরের পাশে একটা মারিকেলগাছ ছিল, তারই তলায় বসে ‘পৃথ্বীরাজ-বিজয়” নামে একটা কবিতা রচনা ক’রে গৰ্ব্ব অনুভব করেছিলুম। খোয়াইয়ে বেড়াতে গিয়ে নানা রকমের বিচিত্র মুড়ি সংগ্রহ করা, আর এধারে ওধারে ঘুরে গুহাগছবর গাছপালা আবিষ্কার করাই ছিল আমার কাজ। ভোরবেলায় "উঠিয়ে দিয়ে তিনি আমায় শ্ৰীভগবদগীতা থেকে তার দাগ-দেওয়া শ্লোক নকল করতে দিতেন, রাত্রে সৌরজগতের গ্ৰহতারার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন। এ ছাড়া তখন তিনি আমাকে একটু-আধটু ইংরেজি ও সংস্কৃতও পড়াতেন । তবু তার এত কাছে থেকেও সৰ্ব্বদা মনে হোত, তিনি যেন দূরে দূরে রয়েছেন। এই সময় দেখতুম যে, আশেপাশের লোকেরা কথায়-বাৰ্ত্তায় আলাপেআলোচনায় তার চিত্ত বিক্ষেপ করতে সাহসই করত না। সকালবেলা অসমাপ্ত শুকনো পুকুরের ধারে উঁচু জমিতে ও সন্ধ্যায় ছাতিম-তলায় তার যে ধ্যানের আত্মসমাহিত মূৰ্ত্তি দেখতুম্ সে আমি কখনও ভুলব না। তার পর হিমালয়ের কথা । তীব্র শীতের প্রতুষে প্রত্যহ ব্ৰাহ্মমুহূর্বে তাকে দেখতুম, বাতি হাতে। তার দীর্ঘ দেহ লাল একটা শালে আবৃত ক’রে তিনি আমায় জাগিয়ে দিয়ে উপক্রমণিকা পড়তে প্রবৃত্ত করতেন। তখন দেখতুম, আকাশে তারা, আর পর্বতের উপর প্রত্যুষের আবছায়া অন্ধকারে তার পূৰ্ব্বাস্ত ধ্যানমূৰ্ত্তি, তিনি যেন সেই শাস্ত স্তন্ধ আবেষ্টনের সঙ্গে একাঙ্গীভূত। এই ক'দিন তার নিবিড় সান্নিধ্য সত্ত্বেও এটা আমার \U)