পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারিত্রিপূজা । &a মন দেয় না ; দল বাধিয়া ত্যাগাস্বীকার করে,-ব্যক্তিগত ত্যাগে তাহাদের আস্থা নাই। এই উপায়ে যুরোপ একপ্রকার মহত্ব লাভ করিয়াছে, অন্যপ্রকার মহত্ব খোয়াইয়াছে। "একাকী কৰ্ত্তব্যকৰ্ম্ম নিম্পন্ন করিবার উৎসাহ তাহার নাই। আমাদের সমাজে প্রত্যেককে প্রত্যহই প্ৰত্যেক প্ৰহরেই ধৰ্ম্মপালন করিতে বাধ্য বলিয়া জানে। যুরোপে ধৰ্ম্মপালন করিতে হইলে কমিটিতে বা ধৰ্ম্মসভায় যাইতে হয়। সেখানে সম্প্রদায়গণই সদনুষ্ঠানে রত-সাধারণ লোকেরা স্বার্থসাধনে তৎপর। কৃত্ৰিম উত্তেজনার দোষ এই যে, তাহার অভাবে মানুষ অসহায় হইয়া পড়ে। দল বাধিলে পরস্পর পরস্পরকে ঠেলিয়া খাড়া করিয়া রাখে, কিন্তু দলের বাহিরে নামিয়া পড়িতে হয়। আমাদের দেশে প্ৰত্যেকের প্রত্যহের কৰ্ত্তব্য ধৰ্ম্মকৰ্ম্মরূপে নিদিষ্ট হওয়াতে আবালবৃদ্ধবনিতাকে যথাসম্ভব নিজের স্বর্থপ্ৰবৃত্তি ও পশু প্ৰকৃতিকে সংযত করিয়া পরের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করিতে হয়, ইহাই আমাদের আদর্শ। ইহার জন্য সভা করিতে বা খবরের কাগজে রিপোর্ট পাঠাইতে হয় না। এইজন্য সাধারণত সমস্ত হিন্দুসমাজে একটি সাত্ত্বিকভাব বিরাজমান-এখানে ছোট-বড় সকলেই মঙ্গলচর্চায় রত, কারণ গৃহই তোহাদের মঙ্গলচৰ্চার স্থান। এই যে আমাদের ব্যক্তিগত মঙ্গলভাব, ইহাকে আমরা শিক্ষার দ্বারা উন্নত, অভিজ্ঞতার দ্বারা বিস্তৃত এবং জ্ঞানের দ্বারা উজ্জ্বলতর করিতে পারি ; কিন্তু ইহাক নষ্ট হইতে । দিতে পারি না, ইহাকে অবজ্ঞা করিতে পারি না,-যুরোপে ইহার প্ৰাদুৰ্ভাব নাই ৰলিয়া ইহাকে লজ্জা দিতে এবং ইহাকে লইয়ালজা করিতে পারি না-দলকেই একমাত্র দেবতা জ্ঞান করিয়া তাহার নিকটইহাকে ধূলিলুষ্ঠিত করিতে পারি না। যেখানে দল-বাধা অত্যাবগুক, সেখানে যদি দল বঁাধিতে পারি তো ভাল, যেখানে অনায়াশ্ব্যরক, এমন কি, অসঙ্গত, সেখানেও দল বাধিবার চেষ্টায় শেষকালে দলের উগ্ৰ নেশােস্টফেন অক্ষম্যাস না করিয়া বসি। ‘সর্বাগ্রে সর্বোচ্চে নিজের ব্যক্তিগতকৃত্য, স্নাহা । R