পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లి* চারিত্রিপূজা লঙ্কারের বাড়ীতে উঠিলেন। ইংরাজি শিখিলে সওদাগর সাহেবদের হোসে কাজ জুটিতে পারিবে জানিয়া প্ৰত্যহ সন্ধ্যাবেলায় এক শিপূসরকারের বাড়ী ইংরাজি শিখিতে যাইতেন । যখন বাড়ী ফিরিতেন, তখন তর্কলঙ্কারের বাড়ীতে উপরিলোকের আহারের কাণ্ড শেষ হইয়া যাইত, সুতরাং তাহাকে রাত্রে অনাহারে থাকিতে হইত। অবশেষে তিনি তঁাহার শিক্ষকের এক আত্মীয়ের বাড়ী আশ্রয় লইলেন। আশ্রয়দাতার দারিদ্র্যনিবন্ধন একএকদিন তঁহাকে সমস্তদিন উপবাসী থাকিতে হইত। একদিন ক্ষুধার জালায় তাহার যথাসর্বস্ব একখানি পিতলের থালা ও একটি ছোটো ঘটি কাসারির দোকানে বেচিতে গিয়াছিলেন। কঁাসিারিরা তাহার -পাচসিক দর স্থির করিয়াছিল, কিন্তু কিনিতে সম্মত হইল না ; বলিল, অজানিত লোকের নিকট হইতে পুরাণ বাসন কিনিয়া মাঝে মাঝে বড়ো ফেসাদে পড়িতে হয় । * আর একদিন ক্ষুধার যন্ত্রণা ভুলিবার অভিপ্ৰায়ে মধ্যাহ্নে ঠাকুরদাস বাসা হইতে বাহির হইয়া পথে পথে ভ্ৰমণ করিতে লাগিলেন। “বড়বাজার হইতে ঠনঠনিয়া পৰ্য্যন্ত গিয়া এতো অভিভূত হইলেন যে, আর র্তাহার চলিবার ক্ষমতা রহিল না। কিঞ্চিৎ পরেই তিনি এক দোকানের সম্মুখে - উপস্থিত ও দণ্ডায়মান হইলেন ; দেখিলেন, এক মধ্যবয়স্ক বিধবা নারী ঐ দোকানে বসিয়া মুড়িমুড়কি বেচিতেছেন। তঁহাকে দাড়াইয়া - থাকিতে দেখিয়া, ঐ স্ত্রীলোক জিজ্ঞাসা করিলেন, বা পাঠাকুর দাড়াইয়া *আছ কেন ? ঠাকুরদাস তৃষ্ণার উল্লেখ করিয়া, পানার্থে জল প্রার্থনা করিলেন। তিনি, সাদর ও সস্নেহবাক্যে, ঠাকুরদাসকে বসিতে বলিলেন, এবং ব্ৰাহ্মণের ছেলেকে শুধু জল দেওয়া অবিধেয়, এই বিবেচনা করিয়া, কিছু মুড়কি ও জল দিলেন। ঠাকুরদাস, ষেরূপ, ব্যগ্ৰ হইয়া, মুড়কিগুলি ও সহোদর শ্ৰীশম্ভুচন্দ্ৰ বিদ্যারত্ন প্রণীত বিদ্যাসাগরজীবনচরিত।