পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামমোহন রায় qWO», প্ৰতিকূলতা করিয়াছেন। এরূপ আত্মবিলোপ এখন তো দেখা যায় না। } বড় বড় সংবাদপত্রপুট পরিপূর্ণ করিয়া অবিশ্রাম নিজের নামসুধাপানে রাখিতে হয়,-দেশের জন্য যে সামান্য কাজটুকু করি, তাহাও বিদেশীআকারে সমাধা করি, চেষ্টা করি,-যাহাতে সে কাজটা বিদেশীয়দের নয়ন-আকর্ষণ পণ্যদ্রব্য হইয়া উঠে। স্তুতিকোলাহল ও দলস্থ লোকের অবিশ্রাম একমন্ত্রোচ্চারণশব্দে বিব্রত থাকিয়া স্থিরভাবে কোনো বিষয়ের যথার্থ ভালমন্দ বুঝিবার শক্তিও থাকে না, ততটা ইচ্ছাও থাকে না, একটা গোলযোগের আবৰ্ত্তের মধ্যে মহানন্দে ঘুরিতে থাকি ও মনে করিতে থাকি, বিদ্যুদবেগে উন্নতির পথে অগ্রসর হইতেছি। আমরা যে আত্মবিলোপ করিতে পারি না, তাহার কারণ, আমরা আপনাকে ধারণ করিতে পারি না। সামান্যমাত্ৰ ভাবের প্রবাহ উপস্থিত হইলেই আমরাই সর্বোপরি ভাসিয়া উঠি । আত্মগোপন করিতে পারি না বলিয়াই সর্বদা ভাবিতে হয়, আমাকে কেমন দেখিতে হইতেছে । র্যাহারা মাঝারি রকমের বড়োলোক, তাহারা নিজের শুভসঙ্কল্প সিদ্ধ করিতে চান বটে, কিন্তু তৎসঙ্গে আপনাকেও প্ৰচলিত করিতে চান। এ বড়ো বিষম অবস্থা । আপনিই যখন আপনার সঙ্কল্পের প্রতিযোগী হইয়া উঠে, তখন সঙ্কল্পের অপেক্ষ আপনার প্রতি আদর স্বভাবতই কিঞ্চিৎ অধিক হইয়া পড়ে। তখন সঙ্কল্প অনেকসময়ে হীনবল, লক্ষ্যভ্ৰষ্ট হয়। কথায় কথায় তাহার পরিবর্তন হয়। কিছু-কিছু ভালো কাজ সম্পন্ন হয়, কিন্তু সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর কাজটি হইয়া উঠে না । যে আপনার পায়ে আপনি বাধাস্বরূপ বিরাজ করিতে থাকে, সংসারের সহস্ৰ বাধা সে अङिाक्कम করিবে কী করিয়া ? যে ব্যক্তি আপনাকে ছাড়িয়া সংসারের মধ্যস্থলে নিজের শুভকাৰ্য্য স্থাপন করে, সে স্থায়ী ভিত্তির উপরে নিজের মঙ্গলসঙ্কল্প প্রতিষ্ঠিত করে। আর যে নিজের উপরেই সমস্ত কাৰ্য্যের প্রতিষ্ঠা