পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 অখিল চলে গেল।

 এলা জিজ্ঞাসা করলে, “বটু এসেছে না কি।”

 “না বটু নয়।”

 “বলো না, কে এসেছে। আমার ভালাে লাগছে না।”

 “থাক্ সে-কথা, যা বলছিলুম বলতে দাও।”

 “অন্তু, কিছুতেই মন দিতে পারছিনে।”

 “এলা, শেষ করতে দাও আমার কাহিনী। বেশি দেরি নেই।—তুমি উঠে এলে ছাদে। মৃদুগন্ধ পেলুম রজনীগন্ধার। ফুলের গুচ্ছটি সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলে একলা আমার হাতে দেবে বলে। আমাদের সম্বন্ধের ক্ষেত্রে অন্তুর জীবনলীলা শুরু হল এই লাজুক ফুলের গােপন অভ্যর্থনায়, তার পর থেকে অতীন্দ্রনাথের বিদ্যাবুদ্ধি গাম্ভীর্য ক্রমে ক্রমে তলিয়ে গেল অতলস্পর্শ আত্মবিস্মৃতিতে। সেইদিন প্রথম তুমি আমার গলা জড়িয়ে ধরলে, বললে, এই নাও জন্মদিনের উপহার― সেই পেয়েছি প্রথম চুম্বন। আজ দাবি করতে এসেছি। শেষ চুম্বনের।”

 অখিল এসে বললে, “বাবুটি দরজায় ধাক্কা মারতে শুরু করেছে। ভাঙল বুঝি। বলছে, জরুরি কথা।”

 “ভয় নেই অখিল, দরজা ভাঙবার আগেই তাকে ঠাণ্ডা করব। বাবুকে ওইখানেই অনাথ করে রেখে তুমি

১২৬