পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি কিছু কৃশ দেখলে ? মুখ কি তার পাণ্ডবর্ণঃ সত্য বল, আমার কাছে গোপন কোরোনা।” সাহেব বললে, “উদ্বিগ্ন হোয়ে না, বন্ধু, সেই বরবর্ণিনীকে যেমন হৃষ্ট দেখলুম তেমনি পুষ্টও দেখা গেল, তবে কিনা তার মুখের বর্ণে যে পাণ্ডুরতার আভাস পাওয়া গেল সেটা নিশ্চয়ই কোনো প্রসাধনসামগ্রীর গুণে।” ভানুদাদা দীর্ঘতর কাল চিস্ত করে ও দীর্ঘতর নিশ্বাস ফেলে জিজ্ঞাসা করলে, “প্রিয় সুহৃৎ, সেই বালিকার প্রসাধনের উৎসাহ আজকাল কি কিছুমাত্র কমে নি?” সাহেব বললেন, “ভো বন্ধো, শুনে খুসি হবে, আমি যতক্ষণ ছিলেম, তার প্রসাধনপটুত্বের বৃদ্ধি বই হ্রাস ত দেখি নি।” ভানুদাদা মানমুখে পুনশ্চ প্রশ্ন করলে “আকাশের চাদকে দেখে তার কি কোনো প্রকার চাঞ্চল্য লক্ষ্য করে দেখেচ?” সাহেব বললে, “হে ধীমন, তার চাঞ্চল্যের জন্যে আকাশের চাদের কোনো অপেক্ষ থাকে নি— নিকটবৰ্ত্তী কারণই যথেষ্ট।” তার পরে ভানুদাদা তাকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতে উৎসাহ বোধ করলে না। বললে, “Good night:" পূৰ্ব্বেই শুনেচ, রোজ সন্ধ্যাবেলায় মেয়েদের গান শেখাচ্চি। এত দিন প্রায় রোজই একটা না একটা নতুন গান চলছিল ইদানীং তাদের অনুরোধক্রমে পুরোণো গান ধরা গেছে। গত তিন দিন গানের বদলে তিনটে বড় বড় নতুন কবিতা লিখেচি। তাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঠকেরা আশ্চর্য হয়ে গেচে। তারা ভেবে রেখেছিল রবি ঠাকুরের কবিতার ডানা থেকে তার সব পালকগুলো ঝরে গিয়েচে, এখন সে কেবল গদ্যের চালে মাটির উপরে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়াতে পারে, পদ্যের চালে মেঘলোকে উড়তে পারে না। কিন্তু রবি ঠাকুর অস্তাচলের ধারে এসেও তার ছটা বিস্তার করচে। তাতে রঙের ঘটার কৃপণতা নেই, বিচারকদের এই মত। রাত হয়ে এল। আকাশে মেঘ করে রয়েচে— সন্ধেবেলায় এক চোট বৃষ্টি হয়েও গেচে— আবার হয় ত মাঝরাত্রে বৃষ্টি পড়বে— হু হু করে বাদলার ভিজে হাওয়া বইচে। সব নিঃশব্দ, কুকুরগুলো পৰ্য্যন্ত আজ ঘরের 文8°