পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিৰ্ব্বোধের মত বসে জনতাতরঙ্গবিক্ষুব্ধ অন্তরাত্মাকে সাস্তুনা দেবার উপায় খুঁজে পাবে না। যা হোক এ কয়দিন একমুহূৰ্ত্ত আমার শান্তি ছিল না, সময় ছিল না। কাল রাত্তির দুপুর পর্যন্ত হট্টগোলের অধিদেবতার আরতি করেচি। আজ ভোরের বেলা জনতা যখন তন্দ্রানিমগ্ন, যখন তার বহুসহস্রভুজৈঃধুত খর করতালি নিস্তব্ধ, তখন সুখশয্যা ত্যাগ করে মাথায় জল ঢেলে ঢেলে দীপ্ত রাণুকে একখানা চিঠি লিখে যাই। এ চিঠি আমার পূৰ্ব্ব চিঠির এক সপ্তাহ পরে পাবে। এখান থেকে আর এক সপ্তাহ পরে পিনাঙের ঘাটে পৌঁছব | সেখান থেকে যে চিঠি ডাকে দেব, সে আরো এক সপ্তাহ পরে পাবে। তার পর সিঙ্গাপুর, তার পর হংকং, তার পর স্যাঞ্জাই। তার পরে ঘাটের থেকে বাটে উঠব। রেলযান যোগে যাব পাকিনে। আজ হ'ল ২৭শে মার্চ। আমার এ চিঠি যখন তুমি পাবে তখন তোমার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেচে— নিশ্চয় অনুভব করতে পেরেচ যে তোমার পরীক্ষাপত্রীর মোটা মোটা মার্কাগুলি পয়লা বিভাগের ঘাটের অভিমুখে অনুকূল বায়ুতে পাল তুলে দিয়ে পাড়ি দিয়েচে । আগামী শীতে যখন ফিরে যাব তখন দেখব তৃতীয় বার্ষিকের উচ্চ গগনে তোমার বিদ্যাজ্যোতিষ্ক অধিরোহন করেচে। এখানে আমাকে নিয়ে যে মথন কাণ্ড চলচে তার বিস্তারিত বিবরণ হয় ত খবরের কাগজে পাবে। তার আলোচনা করতে আমার আর রুচি হয় না। আমি ক্লান্ত। এখানে দুটি জিনিষ আমার সব চেয়ে ভালো লেগেছে— কাল এখানকার চিনীয় (Chinese) সমাজ আমাকে যে অভ্যর্থনা করেছিল সে বেশ সংযত সুন্দর সরল সহৃদয়। আর পশু সন্ধ্যায় একটি ব্ৰহ্মনী মেয়ে আমাকে নাচ দেখিয়েছিল। তার নাচ ভারি মনোহর, ঠিক যেন পল্লবিত লতার উপরে কখনো পূৰ্ব্বদিক থেকে কখনো দক্ষিণ ২৩৯