পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্রনাথ সচেষ্ট হয়েছেন। এরপরে রাণু রবীন্দ্রনাথের আরও কাছে এসেছেন শাস্তিনিকেতনে গিয়ে মাসাধিককাল অবস্থান করে। ফণিভূষণের কলকাতার চিকিৎসা সম্পূর্ণ হলে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রবীন্দ্রনাথই তাদের শান্তিনিকেতনে আহবান করেন। এ কথা বললে ভুল হবে না, রাণুর সন্নিধ্য পাওয়ার স্বার্থবৃদ্ধিও তার আমন্ত্রণের পিছনে কাজ করেছিল। এখানে রাণু তাকে দেখলেন তার কর্মক্ষেত্রের পটভূমিকায়, যদিও তখন গরমের ছুটি চলছিল। কিন্তু ছত্রছাত্রীরা না থাকলেও আশ্রমবাসী শিক্ষক ও তাদের পরিবারের ছেলেমেয়েরা ছিলেন। তাই লাবু, রেখা, কল্যাণী প্রভৃতিকে বন্ধ হিসেবে রাণু পেয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ আশ্রমে থাকলেই তাকে ঘিরে অনাহুত সভা জমে উঠত— তাই গান, আবৃত্তি, ইংরেজি সাহিত্য পাঠ প্রভৃতি অনুষ্ঠানের স্বাদও রাণু পেয়েছেন, নিজেও অভিসার’ ইত্যাদি কবিতা আবৃত্তি করে তাতে অংশ নিয়েছেন। তার নিজের আসরও ছিল। দেহলির ছাদে সন্ধার সময়ে রবীন্দ্রনাথের কাছে বসে তিনি হিন্দি দোহা, শিশুমহাভারত, রূপকথার গল্প প্রভৃতি শোনাতেন। রবীন্দ্রনাথ তাকে লিখেছেন (২৭ জুলাই ১৯১৮), সন্ধ্যাবেলায় মোড়ায় বসে তুমি যখন আমার কাছে নানা বিষয়ে গল্প বলে যাও সে আমল খুব মিষ্টি লাগে। সন্ধা আকাশের তারা ঈশ্বরের খুব বড় সৃষ্টি, কন্তু সন্ধ্যায় ছাদে রাণুর মুখের কথাগুলি তার চেয়ে কম বড় নয়— ঐ তার আলো যেমন কোটি কোটি যোজন দূরের থেকে আসচে– তেমনি তোমার হাসি গল্প শুনতে শুনতে মনে হয় যেন কত জন্ম জন্মান্তর থেকে তার ধারা সুধাস্রোতের মত বয়ে এসে আমার হৃদয়ের মধ্যে এসে জমচে।" কিন্তু রাণুর ভালোবাসায় যে অধিকারবোধের প্রকাশ তিনি দেখেছেন, তাকে তিনি ভয়ও পেয়েছেন। ভালোবাসা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তার ছিল, কিন্তু ভালোবাসা যখন বন্ধনে পরিণত হওয়ার উপক্রম করেছে তখনই ☾ᏬᎼ