পাতা:চিঠিপত্র (ঊনবিংশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দূতের ভূমিকা পালন করতেন আমার দিদিমা। আজ বলতে দ্বিধা নেই একদিন দিদা হাসতে হাসতে আমাকে এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন “মাসীমা ও বাসন্তী দুজনেই চিরকুট দিয়ে তোমার দাদুর কাছে প্রশ্ন পাঠাতেন। মাঝে মাঝে তোমার দাদু এতে বিরক্ত হতেন খুব। আমি আবার তখন ঠাণ্ডা করতুম।" পরবর্তীকালে ‘আত্মস্মৃতিতে দাদু লিখেছেন— “গোড়ায় তাহাকে একজন স্নেহশীলা প্রতিবেশিনী মাত্র জ্ঞান করিয়াছিলাম ; কিন্তু কয়েক দিন যাইতে না যাইতে বুঝিতে পারলাম, সহজ মধুর সম্পর্কও বিপদের কারণ হইতে পারে। মাতা হেমন্তবালা ও কন্যা বাসন্তী পরিচারিকাবাহিত চিরকুট মারফত আমার জবাব দাবি করিয়া গৃহিণীকে সাহিত্য-বিষয়ক এমন সব প্রশ্ন যখন-তখন করিয়া পাঠাইতে লাগিলেন যে, আবার বাড়ি বদল করিব কিনা সে ভাবনায়ও পড়িতে হইয়াছিল।” (“আত্মস্মৃতি’, পৃ. ৩২৯) পরবর্তীকালে দাদুর উত্তরের গুণে মোহিত হয়েই স্নেহপরবশে ‘মাসিমা হেমন্তবালা দেবী দাদুর সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের কাছে বহু চিঠি লিখেছিলেন (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, চিঠিপত্র ৯ দ্রষ্টব্য)।‘আত্মস্মৃতিতে দাদু লিখেছেন– “তীক্ষবুদ্ধি মাতা অচিরকাল মধ্যে বুঝিতে পারলেন, তাহার উপাস্য রবীন্দ্রনাথ ও নবলব্ধ পুত্রের মনান্তর দুস্তর হইলেও দুরতিক্রম্য নয়।... এই ব্যবধান তাহাকে পীড়িত করিত এবং গোপনে গোপনে দেবতার ও ভক্তের পুনঃসংযোগ স্থাপনে তিনিই যে পুরোহিতের ভূমিকা লইয়া ছিলেন তাহা পরে জানিতে পারিয়াছিলাম। (আত্মস্মৃতি’, পৃ. ৩৩০) মনে আছে দিদার কাছে শুনেছিলাম হেমন্তবালা দেবী দাদু সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথকে যে-কোনো উপায়ে শান্ত করতে সদা ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। তারই ফলস্বরূপ তিনি দাদুকে পাঠান রবীন্দ্রনাথের কাছে (১৩৩৯ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ ভাগে)। 輸 ২২৯