পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা কল্পনা করলে আতঙ্ক উপস্থিত হয়। প্রকৃতির স্পর্শ থেকে নিজেকে স্বতন্ত্র করে রাখবার জন্তে সৰ্ব্বদাই তোমরা আচ্ছাদন বহন করে বেড়াচ্চ । সেই নিত্যবন্ধনদশার ভয়ে ও দেশে বাস করতে ইচ্ছে করে না । এখানে, বিশেষত, শাস্তিনিকেতনে শীতকালটা অত্যন্ত রমণীয়— রৌদ্রের মধ্যে কী বিস্তীর্ণ প্রসন্নতা ! পাতাঝরানো গাছ অতি অল্পই আছে। দুঃশাসন শীত বনলক্ষ্মীর বস্ত্র হরণে কৃতকার্য হতে পারে নি। শিউলি ফুলের দিন ফুরিয়েছে, কাটা নাগেশ্বর ফুলের গন্ধে বাতাস মদবিহ্বল, আর আমাদের হিমঝুরি ফুলের উচ্চচূড়বীথিক তার পাতার স্তবকে স্তবকে ঘন দোতুল্যমান ফুলের রূপোলি কারুকার্য্যে নিবিড় বিচিত্রিত। হিমঝুরি নামটা অামারি দেওয়া— ওর চলিত নাম জানি নে । এই আশ্রমে আমি কালে কালে নানান ঘরে বাস করে । এসেছি— কোথাও বেশিদিন স্থায়ী হতে পারি নি। এবার কোণার্কের এই কোঠা থেকেও সরে যাবার চেষ্টায় আছি। মাটির ঘর তৈরি আরম্ভ হয়েছে। মর্ত্যলোকে ঐটেই আশা করচি আমার শেষ বাসা হবে । তারপরে লোকান্তর। এই মাটির ঘরটাকেই অপরূপ করে তোলবার জন্তে আমার আকাজক্ষা । ইট পাথরের অহঙ্কারকে লজ্জা দিতে হবে। আমার ছবির সম্বন্ধে আমার খুব বেশি আগ্রহ নেই। এমন কি ওর সম্বন্ধে আমার সঙ্কোচ আছে । আজও ছবিতে খ্যাতি অর্জন করি নি বলে চিত্রকর-রূপে আমার মনটা মুক্ত, ও আপন খেয়ালে লীলায় রত লোকমতের নেপথ্যে— ›: ግ