পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গদ্যকাব্যে আমার ছন্দোমুক্তি প্রসঙ্গে তিনি যে ব্যাখ্যা করেছেন তার প্রয়োজন ছিল । অনেকের কাছে ভৎসন। পেয়েছি। আমার কৈফিয়ৎ এই, গদ্যকাব্যে যে বিশেষ জাতীয় রসরচনার অবকাশ পাওয়া যায় তার থেকে সাহিত্যকে বঞ্চিত করা অন্যায়। আমাদের দেশে যোগী সন্ন্যাসী র্যারা, বিশেষ সাজ ও বিশেষ আচরণের দ্বারা সাধারণের থেকে র্তারা অত্যন্ত স্বতন্ত্র, তাই ভেকধারণের সাহায্যে র্তাদের চেনা সহজ । কিন্তু যে যোগী সংসারের মধ্যেই আছেন তিনি যথার্থ মুক্ত, সাজের দ্বারা সন্ন্যাস আশ্রমের আচারের দ্বারা বদ্ধ নন। প্রথাগত দৃষ্টিতেই যারা দেখতে অভ্যস্ত তিনি তাদের চোখে পড়েন না । অথচ র্তার মধ্যে সাধনার যে সত্য আছে সেটা প্রচলিত পরিচয় ও পদ্ধতির বাইরে ব’লেই তার মধ্যে থেকে একটা গভীর নিজকীয়তা জেগে ওঠে, সেটা মূল্যবান,— সংসারের সঙ্গে সংসারাতীতের সামঞ্জস্য ঘটিয়েই সেই মূল্য প্রকাশ পায়। গদ্যকাব্য ভেকধারী নয়, তাই তার মধ্যে সাহিত্যের হরিজন ও জাতকুলীন সহজে মিলে গিয়ে কবিত্বের সম্মান পেতে পারে। কিন্তু এই ব্যাখ্যা দ্বারা আমার মতের সমর্থন এহ বাহ্য, কোনো বিশেষ পরিবেশ থেকে আন্তরিক স্বভাবের প্রেরণায় কাব্য দেখা দিল কি না-দিল সেটা সহৃদয়হৃদয়বেদ্য । সলোমনের গীতিকে রসিকেরা জাতে ঠেলেন না সে প্রচলিত ছন্দের সাজে সভাস্থলে আসে নি বলেই। মনে পড়ছে যেন কোনো চীন জ্ঞানী বলেছেন যে, যে রাজ্যে রাজত্বকে ૨૭૭