পাতা:চিঠিপত্র (একাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবিতা রচনায় যথেচ্ছ শৈথিল্যের দ্বারা যাকে সহজ দেখায় সে আবর্জনা, কিন্তু যথার্থ যা সহজ তাই দুঃসাধ্য— তোমার এই লেখায় সেই দুরূহ সহজ অনায়াসের প্রতীতি নিয়ে দেখা দিয়েছে। তোমার এই কবিতায় আধুনিকের স্বরূপ আমি দেখতে পেলুম। নিজের চিরাভ্যস্ত রচনাধারার সঙ্গে তুলনা করে সেটা আমার পক্ষে বোঝা সহজ । পাহাড়ে আছি তাই একটা পার্বত্য তুলনা মাথায় আসচে। দূরে পাহাড়ের শিখরের নীলিমার ভিতর থেকে দেখা যাচ্চে নির্বারের যাত্রা— সে স্বচ্ছ, সে নির্মল, সূক্ষ্ম আলোয় ছায়ায় রচিত তার উত্তরীয়। তার কলধ্বনিও লাগে ভালো, দৃষ্টির উপরেও তার প্রভাব আছে। সেই ঝরনা যখন নেমে এল নিম্নভূমিতে তখন সবকিছুর সঙ্গে মিলিয়ে সে বিচিত্র, কত ভাঙা চোরা কত খসে পড়া জিনিষকে সে টেনে নিয়ে চলেছে, কত আওয়াজ মিলচে তার কলস্বরে যার সঙ্গে তার সঙ্গতি নেই, কোথাও ফেনা উঠচে ফেনিয়ে, কোথাও বালি কোথাও কাদা ঘুলিয়ে উঠচে তার আবৰ্ত্তে— এই সমস্ত কিছুকে আত্মসাৎ করে অতিক্রম করে তার ধারা, তার চলমান রূপ, কিছুই তাকে সম্পূর্ণ প্রতিবাদ করচে না, তার সমগ্রতাকে রক্ষা করচে, তার সঙ্গে অনায়াসে মিশিয়ে দিচ্চে তুচ্ছতা, সেই তুচ্ছতাকে উপহাস করবার উপলক্ষ্য দেবার জন্যেই। মনে মনে ভেবে দেখলুম স্থষ্টির এই সর্বগ্রাহী লীলা আমার দ্বারা সম্ভবপর নয়, আমি এখানে নামতে পারিনি। কিন্তু তুমি যে ভূতলচারিণী স্রোতস্বিনীর পরিচয় দিয়েছে, তার সঙ্গে আমার দূরবিহারী নিৰ্ব্বরের কোথাও না কোথাও মিল ○> ミ