পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবি গান ধরলেন, অজিত সঙ্গে যোগ দিলেন— আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার পরাণসখী বন্ধু হে আমার ! তারপরে আবার গান ধরলেন— কোথায় অালো কোথায় ওরে আলো ! বিরহানলে জালো রে তারে জালো ! এই দুটি গানই আমি প্রবাসী’র জন্য চেয়ে নিয়ে এসেছিলাম, এবং কবির হাতে লেখা কাগজের টুকরা দুটি এখনো আমার কাছে আছে। এই সময় ‘প্রবাসী’তে “গোরা’ বাহির হচ্ছিল । তিনি আমাকে বললেন আরো একদিন থেকে গোরা'র কপিও সঙ্গে নিয়ে যেতে। আমি তার কাছে থেকে “গোর’ লেখার পদ্ধতিও দেখবার সৌভাগ্যলাভ করলাম। ঘাড় কাত ক’রে ঘস্ঘস্ ক’রে কলম চালিয়ে যাচ্ছেন, আর খানিক লিখে ফিরে পড়ে অপছন্দ অংশ চিত্রবিচিত্ৰ ক’রে কেটে উড়িয়ে দিচ্ছেন। কত সুন্দর সুন্দর রচনাংশ যে কেটে উড়িয়ে দিয়েছেন তা দেখে অামাদের কষ্ট হয়েছে। অামি বললাম যে, আপনি যা লিখে ফেলেন তাতে আর তো আপনার অধিকার থাকে না, তা বিশ্ববাসীর হয়ে যায়, অতএব সব থাক । কবি হেসে বললেন—“তুমি বড় কৃপণ। সব রাখলে কি চলে। সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস না থাকলে কি স্থষ্টি কখনো সুন্দর হতে পারে।” শিলাইদহে থাকবার সময় আমি কবির খুব ঘনিষ্ঠ সংসৰ্গ লাভ করবার সৌভাগ্য লাভ করেছিলাম। সেই সময় তার উপাসনায় তন্ময়ত আর গভীর ধ্যাম দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। ভোর-রাত্রে একখানি চেয়ার বোটের সামনে পেতে পূর্বদিকে মুখ ক’রে তিনি ধ্যানে বসতেন, আর বেলা হ'লে স্বর্ষের আলোক প্রতপ্ত হ’য়ে তার মুখের উপর এসে না পড়৷ পর্যন্ত র্তার ধ্যানভঙ্গ হতে না । তাকে সেই তন্ময় অবস্থায় দেখে আমার মনে হতে নৈবেদ্যে’র সেই কবিতাটি যেটি তিনি তার পিতা মহৰ্ষিকে ૨ X જ