পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কবি বললেন—“তাকে বলে, এখন তো আমার সময় নেই। উপাসন আরম্ভ হবার সময় হয়ে এসেছে, অামাকে সভায় যেতে হবে।” দারোয়ান বললে—সেই লোকটিকে এ কথা বলা হয়েছে, কিন্তু তিনি বললেন তিনি বেশীক্ষণ বিলম্ব করাবেন না, তিনি কেবল মাত্র প্রণাম করেই চলে যাবেন। কবি র্তাকে আসতে অনুমতি দিলেন। যিনি এলেন, দেখলাম, তিনি বৃদ্ধ ও অন্ধ, অপর একজন তার হাত ধ’রে নিয়ে আসছে। তিনি এসে জিজ্ঞাসা করলেন—“আমি কি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের কাছে এসেছি।” কবি বললেন—“ই, আমি রবীন্দ্রনাথ।” বৃদ্ধ ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম ক'রে বললেন—“আমি অন্ধ, আমার এক মেয়ে সম্প্রতি বিধবা হয়েছে। কিন্তু বিধবা হ’য়ে সে কয়েকদিন কান্নাকাটি ক’রে হঠাৎ চুপ করে গেল। আমার কৌতুহল হলো জানতে যে তার কি হলো যে হঠাৎ কান্না বন্ধ হয়ে গেল। তাকে ডেকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম। সে বল্লে—“আমি রবিবাবুর “নৈবেদ্য” বই পড়ে তা থেকে পরম সাস্তুনা পেয়েছি, আর আমার শোক দুঃখ কিছু নেই। আমি তাকে বললাম—‘দারুণ শোক তাপ দূর হয়ে যায় এমন যে বই তুমি পেয়েছ, তা আমাকেও প’ড়ে শোনাও।’ মেয়ে আমাকে সেই বই প্ৰ’ড়ে প’ড়ে শোনালে। আমি তা শুনে মুগ্ধ হ’য়ে গেছি আর বড় সাস্তুনা লাভ করেছি। এই কথাটি বলে আপনাকে আমাদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যাবার জন্য আমি কলকাতায় এসেছি।” এই কথা বলে অন্ধ আবার কবিগুরুকে প্রণাম ক’রে ধীরে ধীরে চ’লে গেলেন। আমি নৈবেষ্ঠে'র ভাব হৃদয়ে ধারণ ক’রে কবির সঙ্গে মাঘোৎসবের উপাসনায় যোগ দিতে গেলাম । রবীন্দ্রনাথের বিনয় ও ধৈর্ধ অসাধারণ । কলকাতায় এলে তার কাছে দর্শকের আনাগোনার আর আস্ত থাকে না । সকাল সাতটা থেকে লোক ૨૨ 8