পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্দশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংকলিত হয়েছে। কবিবন্ধু লিখেছিলেন, ‘ “রুদ্ধগুহে"র ভাব ধরিতে পারিলাম না। : একজনের মধ্যেই রুদ্ধ হইয়া থাকা, একজনকে লইয়াই চিরদিন শোক করা আপনি গৰ্হিত বলিয়াছেন। কিন্তু... তার মতে “এক দিকে চাহিয়া থাকা, একের চারি দিকে ঘোরাই প্রকৃতির নিয়ম, তাহাই প্রকৃতির বন্ধনের কারণ ... পৃথিবী এক সূর্যের দিকে চাহিয়া ঘোরে বলিয়া কি তাহার কোটি গ্রহনক্ষত্রের সহিত বন্ধন ছিন্ন হইয়াছে না, সেই সূত্রেই অনস্তের সহিত পৃথিবীর বন্ধন হইয়াছে? তাই পর্বত আকাশের দিকে চাহিয়া সুন্দর, তাই নদী সমুদ্রের দিকে যদি একদিকে চায় সেও সুন্দর হয়। | R রবীন্দ্রনাথ এর উত্তরে লেখেন (সোলাপুর ২৫ আশ্বিন ১৯২৯এর চিঠি) : আপনি “রুদ্ধ গুহ” যেভাবে বুঝিয়াছেন আমি ঠিক সে ভাবে লিখি নাই। আপনি যাহা বলিয়াছেন সে ঠিক কথা। একের চারিদিকেই আমাদিগকে ঘুরিতে হইবে, নহিলে অনেকের মধ্যে বিলুপ্ত হইয়া যাইব। কিন্তু জগতের মধ্যে আমাদের এমন এক নাই যাহা আমাদের চিরদিনের অবলম্বনীয়। প্রকৃতি ক্রমাগতই আমাদিগকে এক হইতে একাত্তরে লইয়া যাইতেছে— এক কাড়িয়া আর-এক দিতেছে। আমাদের শৈশবের এক যৌবনের এক নহে। যৌবনের এক বার্ধক্যের এক নহে, ইহজন্মের এক পরজন্মের এক নহে। এইরূপ শতসহস্ৰ ‘একে’র মধ্য দিয়া প্রকৃতি আমাদিগকে সেই মহৎ একের দিকে লইয়া যাইতেছে।... শূন্যতার ভয় করিবেন না, কিছুই শূন্য থাকিবে না। সমস্ত শূন্য করিয়া দেয় জগতে এমন বিরহ কোথায়! ক্ষুদ্রতর এক বৃহত্তর একের জন্য স্থান রচনা করিয়া দেয় ... যাহাকে আমরা কখনোই চিরদিন ভালোবাসিতে পারিব না তাহাকে আমরা চিরদিনের জন্য চাই– কিন্তু প্রকৃতি-মতো আমাদের এসকল মিছে আবদার শুনিবেন কেন... আমাদের হাত হইতে মাটির ঢেলা কাড়িয়া লন, আমরা কাদিয়া-কাটিয়া সারা হই... যে শিশু গো ধরিয়াই (; 8 S