পাতা:চিঠিপত্র (ত্রয়োদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সত্যেন্ত্র রেণুকার মৃত্যুর পর এতদিন বোলপুরেই কাজ করিতেছিল— অস্ত মাস পাচ ছয় হইল আমিই চেষ্টা করিয়া তাহার বিবাহ দিয়াছিলাম। এইবার পূজার ছুটিতে আমাদের কোনো কোনো অধ্যাপক পশ্চিমে ভ্রমণ করিতে বাহির হইয়াছিলেন— দিসুও গিয়াছিল। সেই সময়টাতে বিদ্যালয়ে শারদোৎসবের নিমন্ত্রণে সত্য অসিয়াছিল । পশ্চিমের যাত্রীদিগকে দেখিয়া হঠাৎ তাহার মন উতলা হইয়া উঠিল । কাহারো নিষেধ না মানিয়া কাজকৰ্ম্ম ফেলিয়া তাহাদের দলে ভিড়িয়া বাহির হইয়া গেল। লাহোর পর্য্যন্ত গিয়া তাহাকে ও দিমুকে জ্বরে ধরিল । সেখান হইতে কুইজনে অজিতকে সঙ্গে লইয়া কলিকাতায় ফিরিল । দিমু চিকিৎসায় রক্ষা পাইয়া গেল । সত্যেন্দ্র তিন চার দিন জর ভুগিয়া নববধূকে অনাথা করিয়া সংসার পরিত্যাগ করিয়া বিদায় লইয়াছে । মৃত্যুর লীলা অনেক দেখিলাম । আপনার সঙ্গে কতকাল দেখা হয় নাই! বোধহয় সম্বলপুরে গিয়া অবধি এদিকে আর আসেন নাই। যে বিদ্যালয়টিতে চারা অবস্থায় জলসেচন করিয়া গিয়াছেন ফল ধরিবার কাছাকাছি সময়ে এখন তাহাকে একবার দেখিয়া যাইবেন না ? আপনাদের ত্রিমূৰ্ত্তির মধ্যে কেবল এক জগদানন্দ অতীত ইতিহাসের সাক্ষীস্বরূপে বিরাজ করিতেছেন— আর সকলেই নূতন লোক – সমস্তাও নূতন নূতন উঠে — জালে কতবার কত গিঠ পড়িয়া যায়— আমাকেই একলা বসিয়া সেই গ্রন্থি মোচন করিতে হয়।