পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉や8 চিঠিপত্র পরিবর্তনগুলো মনে থাকে না এবং তার ফর্দ দেওয়াও সহজ নয়। ভিতরে ভিতরে অনুভব করচি যেন অনেকগুলো জিনিষ বদলের দিকে যাচ্চে, কিন্তু সম্পূর্ণ দিক নির্ণয় করতে পারচিনে । মোটের উপর বলা যেতে পারে যে যতই সময় যাচ্চে ততই বয়স বাড়চে — ভারতবর্ষের বর্তমান প্রধান খবর হচ্চে, গতকল্য আষাঢ়স্ত প্রথম দিবস গেছে। তার আগের দিন থেকেই রীতিমত ঘনঘটা করে বজ্রবিদ্যুৎ সহকারে নববর্ষার আবির্ভাব হয়েছে। প্রাতঃকালে খিচুড়ি এবং অপরাহুে সাংলা ভাজা প্রচলিত হয়েছে। দিনটা খুব সুদীর্ঘ এবং মেঘস্নিগ্ধ— সন্ধ্যাবেলাটি ঘন অন্ধকার এবং রিমঝিম বর্ষণে বেশ জমাট। প্রায় সে সময়টা বহুবিধ আত্মীয়-বন্ধুমণ্ডলীপরিবৃত হয়ে পঞ্চাশ নম্বর পার্কষ্ট্রীটেই যাপন করা যায়। ঠিক গাড়িতে উঠবার সময়সময় মুষলধারে বৃষ্টি আরম্ভ হয়, অনেক রাত্রি পর্য্যস্ত বৃষ্টিশাস্তির অপেক্ষা করতে হয়—তদবসরে সেই তাকিয়া-পরিবৃত নীচের বিছানায় তাসের মজ লিষ জমে যায়— এবং গোল টেবিলটার কাছে আমাদের মত একদল অনভিজ্ঞ লোকের সভা বসে। গত ছুদিন ধরে শারাড, অভিনয় চলচে, তাতেও আমাদের বর্ষার সভা খুব সরগরম হচ্চে। এর থেকেই কতকটা বুঝতে পারবে পঞ্চাশ নম্বরে উনপঞ্চাশ পবন পূৰ্ব্ববৎ প্রবল প্রতাপে প্রবহমান। (অভাববশতঃ কাগজের আয়তন বদলে গেল । )— গত সন্ধ্যাবেলার জনসংখ্যার একটা তালিকা দিলেই বুঝতে পারবে পঞ্চাশ নম্বরের সভ্যসংখ্যা বৃদ্ধি বই হ্রাস হয়নি ।