পাতা:চিঠিপত্র (পঞ্চম খণ্ড ১৯৪৫)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র २९S যাদের আলো-ছায়ার লীলা, বাইরে বেড়ায় মনের মানুষ যারা তাদের প্রাণের ঝরনা স্রোতে আমার পরাণ হয়ে হাজার-ধারা চলচে বয়ে চতুর্দিকে । কালের যোগে নয় ত মোদের আয়ু, নয় সে কেবল দিবস-রতির সাতনলী হার, নয় সে নিশাসবায়ু। নানান প্রাণের প্রেমের মিলে নিবিড় হয়ে আত্মীয়ে বান্ধবে মোদের পরমায়ুর পাত্র গভীর করে পূরণ করে সবে । সবার বাচায় আমার বঁাচ আপন সীমা ছাড়ায় বহুদূরে, নিমেষগুলির ফল পেকে যায় বিচিত্র আনন্দরসে পুরে ; অতীত হয়ে তবুও তার বর্তমানের বৃস্ত-দোলায় দোলে,— গর্ভ হতে মুক্ত শিশু তবুও যেমন মায়ের বক্ষে কোলে বন্দী থাকে নিবিড় প্রেমের বাধন দিয়ে । তাই ত যখন শেষে একে একে আপন জনে সূৰ্য্য-আলোর অন্তরালের দেশে আঁখির নাগাল এড়িয়ে পালায়, তখন রিক্ত শীর্ণ জীবন মম শুষ্করেখায় মিলিয়ে আসে বর্ষাশেষের নিঝরিণী সম শূন্ত বালুর একটি প্রাস্তে ক্লাস্ত বারি স্রস্ত অবহেলায়। তাই যারা আজ রইল পাশে এই জীবনের অপরাহু বেলায় তাদের হাতে হাত দিয়ে তুই গান গেয়ে নে থাকতে ū দিনের আলে,— বলে’ নে ভাই, “এই যা দেখা, এই যা ছোওয়া, এই ভালো, এই ভালো । এই ভালো আজ এ সঙ্গমে কাল্পাহাসির গঙ্গা-যমুনায় ঢেউ খেয়েচি, ডুব দিয়েচি, ঘট ভরেচি, নিয়েচি বিদায়।