সমুদ্রতীর এবং সমুদ্রতরঙ্গের উপর যখন কবিতা লিখ্চি তখন আর কাঠা বিঘের জ্ঞান থাকে না, তখন অনন্ত সমুদ্র অনন্ত তীর চোদ্দ অক্ষরের মধ্যে। আর সেই সমুদ্রের ধারে একটি ছোট্ট বাঙ্গ্লা বানাতে যাও, তখন এঞ্জিনিয়র কণ্ট্রাক্টর এষ্টিমেট্ চিন্তা পরামর্শ— ধার এবং টোয়েল্ভ্ পার্সেণ্ট সুদ— তার উপরে আবার কবির স্ত্রীর পছন্দ হয় না, লোক্সান বোধ হয়— স্বামীর মস্তিষ্কের অবস্থার উপর সন্দেহ উপস্থিত হয়। কবিত্ব এবং সংসার এই দুটোর মধ্যে বনিবনাও আর কিছুতে হয়ে উঠ্ল না দেখচি। কবিত্বে এক পয়সা খরচ নেই (যদি না বই ছাপাতে যাই) আর সংসারটাতে পদে পদে ব্যয়বাহুল্য এবং তর্কবিতর্ক। এই রকম নানা চিন্তা করচি এবং খালের মধ্যে দিয়ে বোট টেনে নিয়ে যাচ্চে— আকাশে ঘননীল মেঘ করেচে— ভিজে বাল্লার বাতাস দিয়েছে, সূর্য্য প্রায় অস্তমিত— পিঠে একখানি শাল চাপিয়ে যোড়াসাঁকোর ছাত আমার সেই দুটো লম্বা কেদারা এবং সাঁৎলাভাজার কথা এক একবার মনে করচি। সাঁৎলা ভাজা চুলোয় যাক্ রাত্রে রীতিমত আহার জুটুলে বাঁচি। গোফুর মিঞা নৌকোর পিছন দিকে একটা ছোট্ট উনুন জ্বালিয়ে কি একটা রন্ধন কার্য্যে নিযুক্ত আছে মাঝে মাঝে ঘিয়ে ভাজার চিড়বিড় চিড়বিড় শব্দ হচ্চে— এবং নাসারন্ধ্রে একটা সুস্বাদু গন্ধও আস্চে কিন্তু এক পস্ল বৃষ্টি এলেই সমস্ত মাটি। তোমাদের সকলকে আমার হামি।
শুক্রবার
২৭