পাতা:চিঠিপত্র (প্রথম খণ্ড ১৯৪২)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిన চিঠিপত্র ভাবে গ্রহণ করতে চেষ্টা করচি— একএকসময় ধিক্কার হয় কিন্তু সেটা আমি কাটিয়ে উঠতে চাই । আমাদের বাইরে কে কি রকম ব্যবহার করচে সেটাকে নির্লিপ্তভাবে সুদূরভাবে দেখতে চেষ্টা করা উচিত। অামাদের শোকতুঃখ, বিরাগ অনুরাগ, ভাললাগা না লাগা, ক্ষুধাতৃষ্ণ, সংসারের কাজকৰ্ম্ম, সমস্তই আমাদের বাইরে ;– আমাদের যথার্থ “আমি” এর মধ্যে নেই— এই বাইরের জিনিষকে বাইরের মত করে দেখতে পারলে তবেই আমাদের সাধনা সম্পূর্ণ হয়— সে খুব শক্ত বটে কিন্তু পদে পদে সেইটে মনে রেখে দেওয়া চাই । যখনি কাউকে খারাপ লাগে, যখনি কোন ঘটনায় মনে আঘাত পাওয়া যায় তখনি আপনাকে আপনার অমরত্ব স্মরণ করিয়ে দেওয়া চাই। একদিন রাত্রে বৈঠকখানায় ঘুমচ্ছিলুম সেই অবস্থায় আমার পায়ে বিছে কামড়ায়— যখন খুব যন্ত্রণ বোধ হচ্ছিল আমি আমার সেই কষ্টকে আমার দেহকে আমার আপনার থেকে বাইরের জিনিষ বলে অনুভব করতে চেষ্টা করলুম— ডাক্তার যেমন অন্ত রোগীর রোগযন্ত্রণ দেখে, আমি তেমনি করে আমার পায়ের কষ্ট দেখতে লাগ লুম— আশ্চর্য ফল হল— শরীরে কষ্ট হতে লাগ ল অথচ সেটা আমার মনকে এত কম ক্লিষ্ট করলে যে আমি সেই যন্ত্রণা নিয়ে ঘুমতে পারলুম। তার থেকে আমি যেন মুক্তির একটা নতুন পথ পেলুম। এখন আমি সুখদুঃখকে আমার বাইরের জিনিষ এই ক্ষণিক পৃথিবীর জিনিষ বলে অনেকসময় প্রত্যক্ষ উপলব্ধি করতে পারি— তার মত শান্তি ও সান্তনার উপায়