তারি দুই ধারে ধূপধার হতে উঠিছে গন্ধধুপ,
সিংহবাহিনী নারীর প্রতিমা দুই পাশে অপরূপ।
নাহি কোনো লোক, নাহিক প্রহরী, নাহি হেরি দাস দাসী।
গুহাগৃহতলে তিলেক শব্দ হয়ে উঠে রাশি রাশি।
নীরবে রমণী আবৃত বদনে বসিলা শয্যাপরে,
অঙ্গুলি তুলি ইঙ্গিত করি’ পাশে বসাইল মোরে।
হিম হয়ে এল সর্ব্ব শরীর শিহরি উঠিল প্রাণ;—
শোণিত প্রবাহে ধ্বনিতে লাগিল ভয়ের ভীষণ তান।
সহসা বাজিয়া বাজিয়া উঠিল দশ দিকে বীণা বেণু,
মাথার উপরে ঝরিয়া ঝরিয়া পড়িল পুষ্প রেণু।
দ্বিগুণ আভায় জ্বলিয়া উঠিল দীপের আলোক রাশি,—
ঘোমটা ভিতরে হাসিল রমণী মধুর উচ্চ হাসি।
সে হাসি ধ্বনিয়া ধ্বনিয়া উঠিল বিজন বিপুল ঘরে,—
শুনিয়া চমকি ব্যাকুল হৃদয়ে কহিলাম যোড় করে,—
“আমি যে বিদেশী অতিথি, আমায় ব্যথিয়ো না পরিহাসে,
কে তুমি নিদয় নীরব ললনা কোথায় আনিলে দাসে”!
অমনি রমণী কনক দণ্ড আঘাত করিল ভূমে,
আঁধার হইয়া গেল সে ভবন রাশি রাশি ধূপ ধূমে।