পাতা:চিত্রে জয়দেব ও গীতগোবিন্দ.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গীতগোবিন্দ

আরম্ভ করে। এবং তার নৃত্য-ভঙ্গিমা দেখে গুণীরা পর্য্যন্ত অবাক হয়ে যান। যে-গান, যে-সুর বালিকা একবার মাত্র শোনে, অবিকল সেই সুর তৎক্ষণাৎ বালিকার কণ্ঠ থেকে নির্গত হয়। এতটুকু ভুল হয় না, এতটুকু সুরের হেরফের হয় না। কোথা থেকে বালিকা পেলো এই সুর-জ্ঞান? কোন্ জন্মান্তরের সুশিক্ষা আজও চলেছে বালিকাকে অনুসরণ করে?

 পদ্মাবতীর পিতা উপযুক্ত শিক্ষক রেখে কন্যাকে সঙ্গীত ও নৃত্যবিদ্যা শিক্ষা দেন। শৈশব থেকে পদ্মাবতী ক্রমে কৈশোরে পদার্পণ করে। কিশোরী পদ্মাবতীর তনুদেহে কোথা থেকে আবির্ভূত হয় বিস্ময়কর এক দেহ-বিপর্য্যয়। কাল যে ছিল শিশু, আজ তার দেহ লাবণ্য আর রূপ-রেখায় সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। নিপুণ চিত্রকরের আঁকা ছবির মতন পদ্মাবতীর রূপ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। আপনাতে আপনি বিভোর হয়ে পদ্মাবতী যখন নাচতো, তখন মনে হতো স্বর্গ থেকে যেন দেবকন্যা আকাশ-চ্যুত হয়ে মর্ত্ত্যে এসেছে। সেই অপরূপ কন্যার দিকে চেয়ে চেয়ে ব্রাহ্মণ-দম্পতীর অন্তর আনন্দে ভ’রে উঠতো। যেদিন ব্রাহ্মণ নিঃসন্তান ছিল, সেদিন সন্তান-কামনায় জগন্নাথদেবের কাছে যে-শপথ করেছিল, আজ আর সে-শপথের কথা ব্রাহ্মণের মনেই পড়ে না। সেই অনন্যা কন্যাকে ছেড়ে থাকবার কথা ব্রাহ্মণ-দম্পতী কল্পনাও করতে পারে না।

[সাত]