পাতা:চিত্রে জয়দেব ও গীতগোবিন্দ.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চিত্রে জয়দেব

 বেদনাহত পিতাকে আশ্বস্ত করে বলে, এর জন্যে দুঃখ করছেন কেন বাবা? মেয়ে তো চিরকাল বাপের বাড়ী থাকেনা। দেবতার মন্দিরে আমি দেবদাসী হব, এর চেয়ে আনন্দের কথা আর কি আছে? দেবতা আমাকে চায়, এ তো আমার পরম সৌভাগ্য!

 তারপর একদিন শুভলগ্ন দেখে ব্রাহ্মণ-দম্পতী পদ্মাবতীকে সঙ্গে নিয়ে পুরীধামে জগন্নাথ দেবের মন্দিরে আবার উপস্থিত হলো। যথারীতি কন্যাকে জগন্নাথদেবের পায়ে সমর্পণ করে রেখে এলো।

 পদ্মাবতী জগন্নাথদেবের মন্দিরে দেবদাসী রূপে জগৎ-নাথের পূজারতি করে। প্রতি রাত্রিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে, পুষ্পে মাল্যে বরতনুকে ভূষিত করে, নৃত্যে নৃত্যে নিজেকে দেবতার পায়ে করে সমর্পণ। তার সর্ব্ব-অঙ্গে বেজে ওঠে দেবতার আনন্দ-রতি।

 ব্রাহ্মণ-দম্পতী কন্যাহীন ঘরে ফিরে না গিয়ে প্রত্যহ সেই মন্দিরের চারদিকেই ঘুরে বেড়ায়। প্রতি সন্ধ্যায় সাধারণ দর্শকদের মতনই মন্দিরের গর্ভগৃহের বাইরে থেকে দেখে, মন্দিরের ভিতর কন্যা আরতি-নৃত্যে বিশ্বনাথকে বন্দনা করছে।

 কয়েক দিন পরেই ব্রাহ্মণ আবার স্বপ্ন দেখলো। স্বপ্নে জগন্নাথদেব আবির্ভূত হয়ে বললেন, ব্রাহ্মণ, তোমার সত্য-রক্ষায় আমি সন্তুষ্ট হয়েছি। তোমার কন্যা সাধারণ মেয়ে নয়। স্বয়ং লক্ষ্মীর অংশে তার জন্ম। এক মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্যেই তার জন্ম হয়েছে। তোমার কন্যার জন্যেই অপেক্ষা করে আছে কেন্দুবিল্ব গ্রামে এক ব্রাহ্মণ-কুমার, জয়দেব গোস্বামী তার নাম। সেই তোমার কন্যার স্বামী। তারই কাছে নিয়ে যাও তোমার কন্যাকে।

[বার]