চিত্রে জয়দেব
এক কদম্ব গাছের তলায় সেই মূর্ত্তিকে রেখে জয়দেব উল্লাসে আপনার মনে গেয়ে চলেন কৃষ্ণনাম। কোথায় মন্দির, কোথায় আশ্রয়? এক গৃহহীন যাযাবরের কাছে তুমি এলে ঠাকুর, কোথায় কি করে সে করবে তোমার পূজা?
দেখতে দেখতে কদম্বখণ্ডী ঘাটের সেই রাধাশ্যাম বিগ্রহের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লো। চারদিক থেকে লোক কিসের যেন উন্মাদ আকর্ষণে কদম্বীখণ্ডীর ঘাটের দিকে ছুটে আসতে লাগলো। কৃষ্ণ-নামে বিভোর জয়দেবের সঙ্গে সঙ্গে সেই বিরাট জনতা সমস্বরে গেয়ে ওঠে কৃষ্ণনাম। কৃষ্ণনামে মুখরিত হয়ে ওঠে অজয়ের তীরভূমি। মেলার মতন অনবরত সেখানে আসে যায় জনপ্রবাহ।
সেই বিগ্রহের কথা গিয়ে পৌঁছল বর্দ্ধমানের মহারাজের কাছে। তখন সেই অঞ্চলেই তিনি পরিভ্রমণ করছিলেন। কদম্বখণ্ডীর ঘাটে এসে কৃষ্ণনামে উন্মত্ত সেই বিরাট জনতা আর সেই জনতার কেন্দ্র-পুরুষ-স্বরূপ কবি জয়দেবকে দেখে মহারাজের অন্তর ভক্তি-রসে উদ্বেল হয়ে উঠলো। অবিলম্বে তিনি সেই কদম্বীখণ্ডীর ঘাটে রাধাশ্যামের বিরাট মন্দিরের ব্যবস্থা করলেন। রাজানুগ্রহে কয়েক দিনের মধ্যে সেই নির্জ্জন নদীতটে মাথা তুলে উঠলো মন্দির, মন্দিরসংলগ্ন বিরাট চত্বর, অতিথশালা, ভজনালয়। কাল যে ছিল গৃহহীন যাযাবর, আজ তাকে ঘিরে কলগুঞ্জন করে উঠলো শত শত ভক্তের দল; কাল যে ছিল অপরিচিত, অজ্ঞাত, আজ তার নামে মুখরিত হয়ে উঠলো অজয়ের দুই তট।
পদ্মাবতীর পিতা বিস্ময়ে সেই দৃশ্য দেখলেন এবং নিজের অবিশ্বাসের জন্যে নিজেকে শত ধিক্কার দিলেন। ভগবান যে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন,
[আঠার]