গীতগোবিন্দ
তার আবার আশ্রয়ের অভাব কি? তার আবার ঐশ্বর্য্যের প্রয়োজন কি? ভগবান নিজেই তার ভার বহন করে থাকেন।
পদ্মাবতীর পিতা সেই পুরাতন সত্যকে আবার নিজের চোখের সামনে সার্থক হয়ে উঠতে দেখলেন। জয়দেবের অপূর্ব্ব ভক্তি দেখে, তাঁর অন্তর-উচ্ছসিত দৈবসঙ্গীত শুনে, পদ্মাবতীর পিতা নিজে কবির পরম ভক্ত হলেন এবং তাঁর কেন্দুবিল্বতে আসার সমস্ত কাহিনী আনুপূর্ব্বিক জানালেন। জয়দেবের হাত ধরে মিনতি করলেন, বিশ্বনাথের বিধানে তাঁর কন্যাকে গ্রহণ করে ধন্যা করতে হবে।
জয়দেব সেই অপরূপ কন্যার কথা শুনে তাকে দেখবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে উঠলেন।
সেদিন স্বপ্নে দেখলেন, রাধাশ্যামের যুগল মূর্ত্তিতে শ্রীমতীর অঙ্গ থেকে এক আলোকধারা বিনির্গত হলো। সেই আলোক-ধারা ক্রমশঃ এক নারীমূর্ত্তির রূপ ধরে জয়দেবের দিকে অগ্রসর হয়ে আসতে লাগলো। ক্রমশঃ জয়দেবের সামনে এসে সেই অসামান্যা-রূপলাবণ্যময়ী নারী মুগ্ধ-দৃষ্টিতে কবির দিকে চেয়ে রইলো। কবি মর্ম্মের চক্ষু দিয়ে সেই মূর্ত্তিকে বহুক্ষণ ধরে নিরীক্ষণ করলেন। ধীরে জয়দেবকে প্রণাম করে সেই মূর্ত্তি আবার পিছন ফিরে ধীরে ধীরে শ্রীমতীর অঙ্গে মিশিয়ে গেল।
সেদিন প্রভাতে ব্রাহ্মণ যখন পদ্মাবতীকে সঙ্গে নিয়ে জয়দেবের কাছে এলেন, জয়দেব বিস্ময়ে দেখেন, এই সেই নারী যাকে স্বপ্নে দেখেছিলেন।
পদ্মাবতী জয়দেবের চরণে নত হয়ে প্রণাম করে।
[ঊনিশ]