চিত্রে জয়দেব
কুমারদত্তকে ধরবার কোন চেষ্টাই করলো না। কুমারদত্ত মাধবীকে শাসিয়ে বীরদর্পে চলে গেল।
মাধবী কিন্তু নীরবে এই অপমান সহ্য করলো না। অভিযোগ নিয়ে স্বয়ং রাজসভায় গিয়ে উপস্থিত হলো এবং রাজাকে আহ্বান করে বল্লো, আপনি রাজা, দেশের রক্ষক। আমি আপনার কাছে বিচার-প্রার্থী।
ওধারে কুমারদত্ত গিয়ে রাণী বল্লভাকে খবর দিতে, রাণী বল্লভা পর্দ্দার আড়ালে রাজসভার পেছনে এসে দাঁড়ালেন।
মাধবী সর্ব্বসমক্ষে কুমারদত্তের অত্যাচারের সমস্ত বিবরণ দিলো। সেই অত্যাচারের কাহিনী শুনে ব্রাহ্মণ গোবর্দ্ধন আচার্য্য ক্রোধে অগ্নিশর্ম্মা হয়ে উঠলেন।
রাণী বল্লভা পর্দ্দা সরিয়ে রাজসভায় এসে মাধবীকেই উল্টে দুশ্চরিত্রা বলে গালাগালি দিয়ে উঠলেন এবং সর্ব্বসমক্ষে মাধবীর চুল ধরে টানতে টানতে তাকে ভেতরে নিয়ে যাবার চেষ্টা করলেন।
গোবর্দ্ধন আচার্য্য তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়িয়ে হাতের দণ্ড তুলে রাণীর পথ আগলে দাঁড়ালেন এবং রাজাকে সম্বোধন করে বল্লেন, আপনি যদি এই মুহূর্ত্তে পাপিষ্ঠ কুমারদত্তের উপযুক্ত শাস্তির বিধান না করেন, তা হলে আমি অভিশাপ দিতে দিতে আপনার এই পাপ-সভা পরিত্যাগ করে চল্লাম।
রাজা লক্ষ্মণ সেন তৎক্ষণাৎ ব্রাহ্মণের হাত ধরে তাঁকে প্রতিনিবৃত্ত করলেন এবং তদ্দণ্ডেই কুমারদত্তের নির্ব্বাসন-দণ্ড বিধান করলেন।
অপর দুজন কবির মধ্যে ধোয়ী কবির একখানি সমগ্র কাব্য এখনও প্রচলিত আছে। কালিদাসের অনুকরণে তিনি পবনদূত লেখেন।
কিন্তু লক্ষ্মণ সেনের রত্নসভার উজ্জ্বলতম রত্ন ছিলেন জয়দেব কবি। তাঁর এবং তাঁর সুযোগ্যা পত্নী পদ্মাবতীর সঙ্গীত ও কাব্য-প্রতিভা সম্বন্ধে একটী অপরূপ কাহিনী প্রচলিত আছে। কাহিনী হলেও, তা থেকে বোঝা যায়, এই কবি-দম্পতী কি অসাধারণ প্রতিভারই অধিকারী ছিলেন। জয়দেব তাঁর কাব্যে প্রকাশ্যভাবে যেভাবে পদ্মাবতীর জয়গান গেয়ে গিয়েছেন, যেভাবে পৃথিবীর কাছে নিজের নামের সঙ্গে পত্নীর নামকে অচ্ছেদ্য বন্ধনে বেঁধে গিয়েছেন, তার ভেতর থেকে যেমন ফুটে উঠেছে কবি-পত্নীর প্রতি কবির অসাধারণ প্রেম, সেই সঙ্গে ফুটে
[আটাশ]