পাতা:চিত্রে জয়দেব ও গীতগোবিন্দ.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গীতগোবিন্দ

উঠেছে পদ্মাবতীর অসামান্য প্রতিভার স্বীকৃতি। জগতের শ্রেষ্ঠ কবিদের পত্নীরা স্বামীর প্রতিভার সমভাগিনী ক্বচিৎ হন। কিন্তু কবি জয়দেবের ভাগ্যে যে পত্নীলাভ ঘটেছিল, সে-নারী ছিলেন সে-যুগের বর-নারীদের মধ্যে সঙ্গীতে নৃত্যে সর্ব্বশ্রেষ্ঠা। পদ্মাবতীর জীবন ও চরিত্র থেকে বোঝা যায়, সে-যুগে বাংলাদেশে নারীর স্থান ছিল কতখানি অকুণ্ঠ। নারী ছিল সমাজের সৌন্দর্য্য ও রসবোধের প্রধান উৎস। তার হাতে তখন খুন্‌তী আর হাঁড়ি ছিল না শুধু, ছিল বীণা। তার স্থান ছিল না শুধু রান্নাঘরে আর অন্তঃপুরে, তার স্থান ছিল সমাজের হৃদ্-কেন্দ্রে। রস-চর্চ্চার ক্ষেত্রে সেদিনও নারী ছিল বাংলার পুরুষ-প্রতিভার সহযাত্রী।

পনের

 আজ যেমন বাংলাদেশে নট-বৃত্তি সামাজিক নিন্দার অন্ধকার-স্তরে নেমে গিয়েছে, সেদিনের বাংলাতে কিন্তু তা ঘটেনি। সেদিনকার বাংলায় নটবৃত্তি ছিল সামাজিক গৌরবের বস্তু এবং শুধু পুরুষ নয়, নারীও এই নটবৃত্তি সগৌরবে গ্রহণ করতো।

 লক্ষ্মণ সেনের রাজসভায় চলেছে রসের উৎসব। সুবিখ্যাত নট গাঙ্গো তাঁর পুত্রবধূ বিদ্যুৎপ্রভাকে নিয়ে এসেছেন সেই গুণী-সভায় । গাঙ্গো নিজে প্রতিভাশালিনী পুত্রবধূকে সঙ্গীতে ও নৃত্যে শিক্ষা দিয়েছেন। রাজসভায় বিদ্যুৎপ্রভা আলাপ করছেন সুহই রাগ।

 রাজসভার পাশেই ছিল রাজ-নির্ম্মিত এক কূপ। চারদিককার পুরললনারা সেই কূপ থেকে জল নিয়ে যেতেন। বিদ্যুৎপ্রভা যখন সঙ্গীত আলাপ করছিলেন, সেই সময় এক গৃহস্থ বউ কোলে শিশুপুত্রকে নিয়ে কূপ থেকে জল নিতে

[ঊনত্রিশ]