পাতা:চিত্রে জয়দেব ও গীতগোবিন্দ.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গীতগোবিন্দ

বাচঃ পল্লবয়ত্যুমাপতিধরঃ সন্দর্ভশুদ্ধিং গিরাং
জানীতে জয়দেব এব শরণঃ শ্লাঘ্যো দুরূহদ্রুতে।
শৃঙ্গারোত্তর সৎপ্রমেয়রচনৈরাচার্য্য গোবর্দ্ধন-
স্পর্দ্ধী কোঽপি ন বিশ্রুতঃ শ্রুতিধরো ধোয়ী কবিষ্মাপতিঃ॥ ৪ ॥

কবি উমাপতিধর ভাষাকে করেছেন পল্লবিত;
শরণ-কবির আছে মহাসম্পদ
অনায়াসে দ্রুত রচনা করে চলেন দুরূহ সব পদ;
আচার্য্য গোবর্দ্ধন স্বল্প কথার ফুলে
গাঁথেন প্রেমের মন্দারমালা, অনবদ্য;
ধোয়ী কবি জন্ম থেকেই শ্রুতিধর;
তাঁরা প্রত্যেকেই আলো করে আছেন
কাব্যের এক-একটা দিক,
কিন্তু সব দিক নিয়ে সম্পূর্ণ এই কাব্য
রচনা করলেন কবি জয়দেব॥ ৪ ॥


 কবি জয়দেব তাঁর সমসাময়িক কবিদের কথা এখানে উল্লেখ করছেন।

 জয়দেব ছিলেন তখনকার বঙ্গেশ্বর লক্ষ্মণ সেনের প্রধান সভাকবি। লক্ষ্মণ সেন অত্যন্ত বিদ্যানুরাগী ছিলেন। তাঁর রাজসভায় তিনি দেশের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ কবিদের নিয়ে এসে সম্মানের স্থান দিয়েছিলেন। তাঁর সভায় পাঁচজন সভাকবি ছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই সে-যুগের এক-একজন শ্রেষ্ঠ কবি। একটি শিলালিপিতে সেই পাঁচজন কবির নাম পাওয়া গিয়েছে, নবদ্বীপের রাজ দরবারের দ্বারে এই শ্লোকটি লেখা ছিল,

“গোবর্দ্ধনশ্চ শরণো জয়দেব উমাপতিঃ।
কবিরাজশ্চ রত্নানি পঞ্চৈতে লক্ষ্মণস্য চ॥”

“রাজা লক্ষ্মণ সেনের আছে এই পঞ্চরত্ন—গোবর্দ্ধন, শরণ, জয়দেব, উমাপতি ও কবিরাজ ধোয়ী।” এই পাঁচজন কবিরই কিছু কিছু রচনা আজও পর্য্যন্ত সৌভাগ্যবশতঃ পাওয়া যায়। তার মধ্যে, জয়দেবের গীতগোবিন্দ এবং ধোয়ী কবির পবনদূত বিশেষ বিখ্যাত।

[ঊনচল্লিশ]