পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
চীন ভ্রমণ।

স্বজনের কুশল-কামনা ব্যর্থ ক’রে অসংখ্য মানব, পতঙ্গের মত প্রাণ বিসর্জ্জন দিতেছে।

 এদিকে যেমন হংকং দ্বীপ, অপরদিকে অনতিদূরে চীন-সম্রাটের শাসনাধীন চীন দেশ অবস্থিত। দুটী এত নিকট নিকট যে, গোলাগুলি মারিলে তাহা হংকং দ্বীপ হইতে তথায় পৌছায়। অনেক নৌকা ষ্টীমার ও জাহাজ অনবরত হংকং হইতে তথায় যাতায়াত করিতেছে। তার মধ্যে একটী স্থান ক্যাণ্টন।

 চীনরাজ্যের দক্ষিণ অংশে যত নগর আছে, তার মধ্যে ক্যাণ্টন সর্ব্বাপেক্ষা বড় সহর, স্বনাম-প্রসিদ্ধ একটি নদীর তীরে অবস্থিত। হংকং হইতে আমেরিকান কোম্পানীর জাহাজ দিনে দু’খানি সেখানে যায় আসে এবং বারো ঘণ্টায় হংকং হইতে ক্যাণ্টনে গিয়া পৌছায়। পুর্ব্বেই বলিয়ছি এ সকল অঞ্চলে আমেরিকানদের কাজ কারবারই বেশী। সেইরূপ নিকটবর্ত্তী আরও অনেক স্থানে তাদেরই জাহাজ যাতায়াত করে। ক্যাণ্টন যাইবার জাহাজ গুলির নীচের তলায় কেবল 'ট্যাঙ্ক’ অর্থাৎ বড় বড় চৌবাচ্চায় পরিপূর্ণ। সেইখানকার জলে নানা রকমের মাছ জীয়াইয়া আনা হয়। জাহাজের অন্যান্য তালা চীনে যাত্রীতে পরিপূর্ণ। জাহাজে অবস্থিতিকালে চীনে যাত্রীদিগকে একটি প্রশস্ত কামরায় তালা চাবি দিয়া রাখা হয়। এরূপ করার কারণ, পূর্ব্বে চীনদেশে বোম্বেটে দস্যুর সংখ্যা অতিশয় বেশী ছিল। তাহারা যাত্রী সাজিয়া জাহাজে উঠিত এবং জাহাজের সকলকে হত্যা করিয়া তাহাদের সর্ব্বস্ব অপহরণ করিত। তাই সকল যাত্রীদিগকেই আবদ্ধ করিয়া রাখা হয়।

 ক্যাণ্টনের মত বহু লোক-পূর্ণ সহর আর কোথাও নাই। সহরটি আয়তনে খুব বড় নহে, অথচ তথায় ত্রিশ লক্ষ লোকের বাস। কলিকাতায় দশ লক্ষ লোকের বাস। নদীর উপর বোটে বাস করে,