পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
এময়।

মনের প্রকৃত ভাব, ঠিক তাহা বুঝা গেল না। বোধ হয়, ব্যঙ্গোক্তি নহে। কারণ চীনদেশের স্ত্রীলোকদের সরলতার তুলনা নাই।

 আমিও যেমন নূতন লোক দেখিতে গিয়াছিলাম, তাহারও তেমনি নুতন লোক দেখিতে আসিতেন। আমি যাইলেই সকল আমাকে ঘিরে বসিতেন। তাঁহাদের ভাষা জানি না বলিয়া সুইচিন ও তাঁহার ভাই ছাড়া আর কাহারও সহিত কথা কহিতে পারিতাম না। তবে সঙ্কেেতে অনেক ভাব বুঝা যাইত। পুরুষরা কেহ না থাকিলে যদি আমি তাঁহাদের বাড়ী যাইতাম, সুইচিনের ভগিনী তাঁহাদের অফিস হইতে ইংরাজী বুঝেন এমন লোক ডাকাইয়া আনিয়া কথাবার্ত্তা কহিতেন। আমি বলিতাম, “আমার বড় ইচ্ছে করে —চীনে ভাষা শিখিয়া আপনার সঙ্গে স্বাধীন ভাবে কথা কই।” তিনি বলিতেন, “আপমি এক মাস আমাদের কাছে থাকুন, আমরা চীনে ভাষা সব আপনাকে শিখাইয়া দিব।”

 কিন্তু সুইচিনের বৃদ্ধা মাতার চক্ষে আমি বড় প্রিয় হইতে পারি নাই। প্রথম সাক্ষাতের দিন তিনি কেবল জিজ্ঞাসা করেছিলেন “তোমার মা আছেন? তোমরা ক-ভাই।” তার পর আর বড় একটা কথা কন নাই। মনে হতো, তাঁহার মেয়েটির সহিত আমি বেশী মেশামিশি করি, সেটা তাঁর বড় ভাল লাগিত না। বয়স্থা আইবুড়া মেয়েকে সামলে বেড়ান যেমন, আমাদের দেশের প্রবীণদের মধ্যে দেখা যায় তাঁহাকেও সেইরূপ দেখিলাম।

 তাঁদের বাড়ীতে দু’দিন আহার ক’রে ছিলাম। আজ শেষ দিন। সাধারণতঃ স্ত্রীলোকেরা পুরুষের সঙ্গে একত্র এক টেবিলে বসিয়া আহার করেন না; আমার অনুরোধে বসিয়া রহিলেন মাত্র। তাঁরা নিজেদের দেশের মতই আহার করিতেন। এময়ের নিকটস্থ যে দ্বীপে বিদেশীরা বাস করেন, সেইখানকার ফরাসী হোটেল হইতে