পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ব্রহ্মদেশ।
২৫

ভিতর দিয়া তাহারা বর্ম্মায় আসিয়া বসবাস করিয়াছে। যে সকল আদিমনিবাসীদের পরাস্ত করিয়া তাহারা বর্ম্মা দেশে বাস করে, সেরূপ অনেক জাতি এখনও বর্ম্মায় দেখা যায়। তাহার মধ্যে 'কারণ' জাতি একটি। ইহাদের অধিকাংশই খ্রীষ্টানধর্ম্মে দীক্ষিত হইয়াছে, এবং সেই কারণেই সকল বিষয়েই ইহারা উন্নত।

 বর্ম্মার পুরুষগণ অতিশয় আলস্য-পরবশ। কেবল চুরট থাইয়া, গল্প-গুজব ও আমোদ-আহলাদ করিয়াই সময় কাটায়। ধান বর্ম্মার একটি প্রধান উৎপন্ন দ্রব্য, -এত বড় ধানের আড়ৎ আর কোথাও নাই। প্রতি বৎসর প্রায় সাড়ে তের কোটি টাকার ধান এখান হইতে রপ্তানী হয়। কিন্তু অনেক চাষা সুদখোর মাদ্রাজী শ্রেষ্ঠী কর্তৃক বড়ই উৎপীড়িত। অতিরিক্ত আমোদ-আহলাদের জন্য বেশী সুদে টাকা ধার করিয়া তাহারা বড়ই বিপন্ন। পূর্ব্বেই বলিয়াছি, বর্ম্মায় প্রায় শতকরা ৩০ জন চীনে আসিয়া বাস করিয়াছে এবং তাহারা বর্ম্মা রমণী বিবাহ করিয়া এক প্রকার সঙ্কর জাতি উৎপন্ন করিয়াছে। শুনা যায়, ইহাতে বর্ম্মার অনেক মঙ্গল ঘটিয়াছে। তাহাদের অপত্যগণ পিতার মত পরিশ্রমী, -বর্ম্মা দেশের লোকের মত অলস নাহে। কিন্তু অনেক চীনেম্যান্ দেশে ফিরিয়া যাইবার সময় ছেলেগুলিকে লইয়া যায়, মেয়েদের রাখিয়া যায়। মেয়েরা বর্ম্মার মত স্ত্রীস্বাধীনতার দেশ হইতে চীন দেশে গিয়া সুখী হয় না। তাহার ফলে এই দাঁড়াইয়াছে, এরূপ মেয়ের সংখ্যা এত বেশী যে, কোনও বিদেশী বর্ম্মায় যাইলে তাহারা উপপত্নী হইয়া থাকিবার জন্য দলে দলে তাহার নিকট আসিতে থাকে। বিদেশী লোক একা বর্ম্মা দেশে বেশী দিন থাকিলে তাহার আর নিস্তার নাই।

 বর্ম্মা দেশের লোক ভাল কারিগর। ঘরে ঘরে রেশমের কাপড় বোনা হয়,—কিন্তু বাড়িতে ছাড়া তাহারা সে মোটা রেশমের কাপড়