পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
চীন ভ্রমণ।

 বাড়ী গুলি সব তিন চারিতলা উচু। সর্ব্বোপরের ছাত ঢালু। গায়ে গায়ে গাঁথা সবগুলি এক রকম দেখিতে ও অধিকাংশই নীল রঙ মাখান। নীচে দোকান; উপরে থাকিবার আড্ডা। দোকানের সামনে নীল রঙের সাইনবোৰ্ড ঝুলচে। চীনে হরফগুলি নীচে নীচে লেখা,—দেখিতে ঠিক যেন ঘর বাড়ীর মত। প্রতি বাড়ীর সম্মুখেই ঢাকা বারান্দা। সব বাড়ীর বারান্দাগুলি সংযুক্ত; সুতরাং তার ভিতর দিয়া যেন একটা ঢাকা ফুটপাথ হইয়াছে। বরাবর যাইলে মাথায় রৌদ্র বা বৃষ্টির ছাঁট লাগে না।

 রাস্তায় রথযাত্রার মত ভীড়। দ্রুতবেগে রিক্সা গাড়ী প্রভৃতি অনবরত যাতায়াত করিতেছ। এমন কি কলিকাতা হইতে গিয়াও আমাদের ভাবোচেকা লাগিত। মধ্যে মধ্যে সমুদ্র হইতে এক একটা খাল কাটা হইয়াছে,তাহা দিয়া কত নৌকা মালপত্র আনিয়া একেবারে দোকনের কাছে পৌঁছাইয়া দিতেছে। জলের উপর দিয়া বহিয়া আনিবার খরচ, জমির উপর দিয়া আনার খরচের এক তৃতীয়াংশ মাত্র। এখানে ভাল ভাল ডাক্তারখানা আছে,—কিন্তু খুব ভাল ডাক্তার নাই। বড় লাইব্রেরী নাই,যাহা আছে তাহা নভেলে পূর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয় নাই,—উচ্চ শ্রেণীর বিদ্যালয়ে বিদ্যাশিক্ষা দেওয়া হয়।

 এখানে এত ঘন বসতি যে সমস্ত সহরটিতে,রেঙ্গুন ও পিনাঙের মত একটাও বড় উদ্যান বা মন্দির দেখিলাম না। ঘোড়দৌড়ের মাঠ আছে বটে কিন্তু তাহা ছোট ও তাহার চারিদিকে বসতি। সহরের অনেক দূরে, শিবপুরের কোম্পানীর বাগানের মত,বটানিকাল গার্ডেন আছে। সেখানকার দৃশ্য অতি মনোহর। তার নিকটে কোথাও বসতি নাই। চারিদিক নিস্তব্ধ; যেন পৃথিবীর সহিত সকল সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন। সেখানকার স্বচ্ছ সরোবরে “ভিকটোরিয়া রিজিয়া” (রাণী ভিকটোরিয়া) নামক আমাদের পদ্ম জাতীয় এক প্রকার প্রকাণ্ড