পাতা:চীন ভ্রমণ - ইন্দুমাধব মল্লিক.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চীন জাহাজে যাত্রিদল।
৭৫

নামিতে হইলে খুব সন্তৰ্পণে অপরের সাহায্য লইয়া তাঁহাকে নামিতে হইত। তিনি ভাল করিয়া চলিতে পারিতেন না। কাপ্তেন একদিন কমোডোরকে জিজ্ঞাসা করিলেন,–“Commodore, ইনি কে?” কমোডোর বলিল,—“Wife’s sister going to his husband.” অর্থাৎ, -“আমার স্ত্রীর বোন স্বামীর কাছে যাচ্ছেন।” পিজন ইংলিসে his এবং her প্রভৃতি পুংলিঙ্গ ও স্ত্রীলিঙ্গবাচক সর্ব্বনাম শব্দে কোন প্রভেদ নাই।

 প্রথম শ্রেণীতে অনেক গুলি রমণী ছিলেন,তাহার মধ্য কাহারও কাহারও বর্ণ তুষারের মত শুভ্র, চেহারা ক্ষীণ ও দীর্ঘ। চিবুক অত্যন্ত উচু ও চীনদেশীয় স্ত্রীলোকের মত কালো রেসমের পোষাক পৱা। ইঁহাদের সহিত অনেক লোকজন ছিল। শুনিলাম, ইহারা মাঞ্চু জাতীয় স্ত্রীলোক। চীনের রাজবংশ এই মাঞ্চু তাতার জাতীয়। তাঁহারা কাহারও সহিত মিশিতেন না।

 ইহাদের ঘরের পাশেই একটি ঘরে একজন স্ত্রীলোক থাকিতেন,তাঁহাকে আমরা উঠিবার দিন ও নামিবার দিন মাএ দেখিয়াছিলাম। আর কোনও দিন তিনি ঘরের বাহির হন নাই। সর্বাঙ্গ সাদা পরিচ্ছদে ঢাকা-অন্য কোনও রং নাই। তাঁহার সঙ্গে একটি দাসী থাকিত। তাঁহার স্বামী, কাছে পৃথক এক ক্যাবিনে থাকিতেন। আমি যদিও তাঁহাদের খুব নিকটেই থাকিতাম,কিন্তু তাঁহাকে কখনও তাঁহার স্ত্রীর ঘরে যাইতে দেখি নাই। ইনি কোরিয়া দেশের স্ত্রীলোক। এমন অবরোধপ্রথা পৃথিবীর আর কোনও দেশেই নাই। বিবাহের পর স্বামী ভিন্ন কোনও পুরুষ,এমন কি, নিজের পিতাভ্রাতাও ইহাদের মুখ দেখিতে পান না। শুনিলাম সিওলে রাত্রিকালে স্ত্রীলোকেরা ছোট ছোট কাগজের লণ্ঠন হাতে করিয়া পথে বাহির হয় বলিয়া পুরুষেরা রাত্রে পথে বাহির হইতে পারে না। তবুও ভাল,