পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৩১

 একটী উত্তর পাইয়া আমার আনন্দ হইল। ভাবিলাম, যখন একটী কথার উত্তর পাইয়াছি, তখন আর ভাবনা কি? পুনরার জিজ্ঞাসা করিলাম, “অধিক মাদক সেবন করিয়াছ কি?”

 জহর বোধ হয় আমার কথা বুঝিতে পারিল না, আমার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। আমি তাহার মনোগত ভাব বুঝতে পারিলাম। বলিলাম, “অতিরিক্ত নেশা করিয়াছিলে?”

 এবর জহর আমার কথা বুঝিল। বলিল, “না মহাশয়, ভাতের খরচ যোগাইতে পারি না, নেশা করিবার পয়সা কোথায় পাইব?”

 কথা শুনিয়া আমি চমকিত হইলাম। ভাবিলাম, লোকটা যখন এমন কথা বলিতেছে, তখন তাহাকে পাগল বলা যায় না। বৃদ্ধকে বলিলাম, “তোমার পুত্ত্র শীঘ্রই আরোগ্য হইবে। জহর যেরূপভাবে আমার কথার জবাব দিয়াছে, তাহাতে বোধ হয়, সে পাগল হয় নাই। মস্তিষ্কের কোন রকম গোলযোগ হইয়াছে। তোমার কোন চিন্তা নাই, জহর শীঘ্রই আরোগ্য লাভ করিবে। এখন আমি জহরকে আর গোটাকতক কথ জিজ্ঞামা করিতে চাই। তুমি কাছে থাকিলে সে হয়ত কোন উত্তর দিবে না। তুমি এখন এখান হইতে চলিয়া যাও।”

 বৃদ্ধ প্রস্থান করিলে পর আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি কাজ কর কোথায় বাপু?”

 অতি শান্তভাবে জহর উত্তর করিল, “আমি নফরের দোকানে কাজ করিতাম।”

 আ। সেখানে আর যাও না কেন?

 জ। আমায় যাইতে দেয় না।