পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৪৯

 নফর আমার মুখের দিকে দৃষ্টিপাত করিল; বলিল, “আজ্ঞে হাঁ, চিনিতে পারিয়াছি; কিন্তু মহাশয়, আমি এক ভয়ানক বিপদে পড়িয়াছি, এখন আপনার কথা শুনিতে পারিব না।”

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি হইয়াছে? আমিও বিশেষ কোন কার্য্যের জন্য তোমার এখানে আসিয়াছি।”

 ন। আমার সর্ব্বনাশ হইয়াছে। দুইজন কারিগর সাংঘাতিক রূপে আহত হইয়া পড়িয়া রহিয়াছে। তাহাদের বাঁচিবার আশা নাই।

 আ। কেন? কিসে তাহাদের এমন অবস্থা হইল?

 ন। আমি আহার করিতে গিয়াছিলাম। দোকানে দুই জন কারিগর বসিয়া কার্য্য করিতেছিল। এমন সময়ে কোথা হইতে জহরলাল দৌড়িয়া দোকানে প্রবেশ করে। দোকানের ভিতর আসিয়া সে আপনার জায়গায় বসিয়াছিল। সে কি জন্য আসিয়াছে, একজন কারিগর জিজ্ঞাসা করিলে, সে বলে যে, তাহার হস্তনির্ম্মিত কালীমূর্ত্তিগুলি দেখিতে আসিয়াছে। আগেই বলিয়াছি যে, ছয়খানি প্রতিমার মধ্যে পাঁচখানির ফরমাইস ছিল। তাহার মধ্যে দুইখানি কেবল পাঠান হইয়াছিল। তিনখানির রং ভাল শুকায় নাই বলিয়া পাঠান হয় নাই। সেগুলি সেদিনের মত শুকাইতে দেওয়া হইয়াছিল। জহরলাল তাহা দেখিতে পায় এবং সেই তিনখানি প্রতিমা লইয়া সে পলায়ন করিতে ইচ্ছা করে। পুতুল তিনটী লইয়া সে যখন পলায়ন করিতে ছিল, তখনই দুইজন কারিগর তাহাকে ধরিয়া ফেলে। পাগলের বল বড় ভয়ানক। সে দুইজনকে ধাক্কা দিয়া দূরে নিক্ষেপ করে, এবং দৌড়িয়া আমার দোকান হইতে পলায়ন করে। কারিগর