পাতা:চূর্ণ প্রতিমা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চূর্ণ প্রতিমা।
৬৭

 স। অপরগুলিতে পায় নাই, আপনি কি রকমে জানিতে পারিলেন।

 আ। যখন সে হরিশ বাবুর বাড়ীর পুতুলটি ভাঙ্গিতে আসে, তখন যে সে অপর চারিখানিতে পায় নাই, তাহা নিশ্চয়।

 সা। ঠিক কথা। জহরলাল বড় চতুর লোক। পাগলের ভাণ করিয়া অনেকবার অব্যাহতি পাইয়াছে।

 আ। পাগলের ভাণ বলা যায় না। কারণ সময়ে সময়ে সত্য সত্যই উহার মস্তিষ্ক বিকৃত হইয়া যায়। তখন ও কি করে, কি বলে, কিছুই জ্ঞান থাকে না। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই সে ভাল থাকে। পাগলের মন ঠিক থাকে না, জহরলাল মন ঠিক করিয়া স্বহস্ত-নির্ম্মিত শেষ পুতুল ছয়টি ভাঙ্গিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়া ছিল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যদি ও ছাড়া পায়, তাহা হইলে কোন না কোন দিন এই প্রতিমা ভাঙ্গিবার জন্য আমার বাড়ীতে যাইত। যদিও আমি নগদ মূল্য দিয়া কিনিয়াছি, সুতরাং আমার নাম ধাম কোনস্থানে লেখা নাই, তবুও জহরলাল কোন না কোন কৌশলে আমার সন্ধান বাহির করিত। দোকানের দুই একজন লোক ও নফর নিজে আমার নাম এখন বেশ জানে।

 লাহেবের সহিত এই সকল কথাবার্ত্তা হইবার পর, আমরা সেই স্থান হইতে বিদায় গ্রহণ করিলাম।

 এবারে জহরকে আর পরিত্রাণ দেওয়া হইল না। মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট তাহাকে বিচারার্থ প্রেরণ করা হইল। ফলে প্রমাণ-প্রয়োগ গ্রহণ করিয়া ও আমার নিকট সমস্ত কথা শুনিয়া, এখন জহরলাল প্রকৃত পাগলে পরিণত হইয়াছে কি না, তাহা জানিবার নিমিত্ত, উহাকে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে রাখিলেন।