ক্যামেরার চোখ নিয়ে, ছােটো ছােটো ছবির ছায়া ছাপ দিচ্ছে অন্তরে। অল্প পরিধির মধ্যে দেখছি বলেই এত স্পষ্ট করে দেখছি। সেই স্পষ্ট দেখার স্মৃতিকে ভরে রাখছিলুম নিরলংকৃত ভাষায়। অলংকার-প্রয়ােগের চেষ্টা জাগে মনে যখন প্রত্যক্ষবােধের স্পষ্টতা সম্বন্ধে সংশয় থাকে। যেটা দেখছি, মন যখন বলে এটাই যথেষ্ট, তখন তার উপরে রঙ লাগাবার ইচ্ছাই থাকে না। চৈতালির ভাষা এত সহজ হয়েছে এইজন্যেই।
এর প্রথম কয়েকটি কবিতায় পূর্বতন কাব্যের ধারা চলে এসেছে। অর্থাৎ, সেগুলি যাকে বলে লিরিক।
আমার অল্পবয়সের লেখাগুলিকে একদিন ছবি ও গান এই দুই শ্রেণীতে ভাগ করেছিলেম। তখন আমার মনে ছিল, আমার কবিতার সহজ প্রবৃত্তিই— ওই দুটি শাখায় নিজেকে প্রকাশ করা। বাইরে আমার চোখে ছবি পড়ে, অন্তরে আমি গান গাই। চৈতালিতে অনেক কবিতা দেখতে পাই যাতে গানের বেদনা আছে, কিন্তু গানের রূপ নেই। কেননা, তখন যে আঙ্গিকে আমার লেখনীকে পেয়ে বসেছিল তাতে গানের রস যদি-বা নামে, গানের সুর জায়গা পায় না।