পাতা:ছড়ার ছবি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তাঁর হাতে রস জমলে লােকের গােল না ঠেকত- এটাই
ফল হবে কি মেঠাই।
রসিয়ে নিয়ে চালতা যদি মুখে দিতেন গুঁজি
মনে হত বড়ােরকম রসগােল্লাই বুঝি।
কাঁঠাল-বিচির মােরব্বা যা বানিয়ে দিতেন তিনি
পিঠে ব’লে পৌষমাসে সবাই নিত কিনি।
দাদা বলেন, ‘মােরব্বাটা হয়তাে মিছেমিছিই,
কিন্তু মুখে দিতে যদি বলতে কাঁঠাল-বিচিই।’
মােরব্বাতে ব্যাবসা গেল জ’মে,
বেশ কিঞ্চিৎ টাকা জমল ক্রমে।
একদিন এক চোর এসেছে তখন অনেক রাত,
জানলা দিয়ে সাবধানে সে বাড়িয়ে দিল হাত।
খুড়ি তখন চাটনি করতে তেল নিচ্ছেন মেপে,
ধড়াস করে চোরের হাতে জানলা দিলেন চেপে।
চোর বললে ‘উহু উহু’; খুড়ি বললেন, ‘আহা,
বাঁ হাত মাত্র, এইখানেতেই থেকে যাক-না তাহা।’
কেঁদে-কেটে কোনােমতে চোর তাে পেল খালাস;
খুড়ি বললেন, ‘মরবি, যদি এ ব্যাবসা তাের চালাস।’


দাদা বললেন, ‘চোর পালালাে, এখন গল্প থামাই?
ছ’দিন হয় নি ক্ষৌর করা, এবার গিয়ে কামাই’
আমরা টেনে বসাই; বলি, ‘গল্প কেন ছাড়বে?’
দাদা বলেন, ‘রবার নাকি, টানলেই কি বাড়বে?—
কে ফেরাতে পারে তােদের আবদারের এই জোর,
তার চেয়ে যে অনেক সহজ ফেরানাে সেই চোর।

৩৩