পাতা:ছন্দপতন - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছন্দপতন বুঝিয়ে বলতে হয়েছিল যে ভাল হলেও সব কবিতা আবৃত্তি করার উপযোগী হয় না। নানান রকম কবিতা আছে তো ! সব কবি তো একরকম কবিতা লেখেন না যে সকলের সব কবিতাই আবৃত্তি করলে জামবে । মানসী বলেছিল, কেন, আবৃত্তি মানে মুখে কবিতা শোনানো। সব কবিতাই নিশ্চয় আবৃত্তি করা চলে । আমি হেসে বলেছিলাম, আবৃত্তি মানে কি তাই আছে ? যে কোন কবিতা ঠিকমত আউড়ে গেলেই আবৃত্তি করা হল ? আবৃত্তির জন্য তা হলে কবিতা বাছা হত না- কয়েকটা কবিতা সব যায়গাতে সবাই আবৃত্তি করত না । ছন্দের বৈচিত্ৰ্য, শব্দের ঝঙ্কার, ভাবানুভূতির ওঠানাম— এসব অনেক কিছু না থাকলে কি আবৃত্তি করলে জমে ! আটলবাবু বলেছিলেন, কথাটা যেন ঠিক মনে হচ্ছে। তাই হবে বোধ হয় । যেমন গান- সুর দিয়ে গাইতে হলে গান লিখতে হবে, কবিতা লিখলে চলবে কেন ? সুময় বলেছিল, গান কি কবিতা নয় ? মানসী বলেছিল, তাই তো ! তবে ? আমি বলেছিলাম, সবই কবিতা । গোড়ার হিসাবে তাই দাড়ায় । কিন্তু ব্যবহার ভেদটা আকাশ-পাতাল বেড়ে গেছে তো । যেটা যে কাজের জন্য যে উদ্দেশ্যে দরকার সেইভাবে লিখতে হয়। আমি নিজের যে কবিতা আবৃত্তি করি সেটা আবৃত্তি করার জন্যই লিখি ! R 0