পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
ছন্দ

[মোর বনে ওগো | গরবী
এলে যদি পথ | ভুলিয়া,
তবে মোর রাঙা | করবী
নিজ হাতে নিয়ো | তুলিয়া।

এর এই নয়মাত্রার পদকে যদি দুইভাগ করা যায় তবুও সমগ্র পদের দিকে তাকিয়ে একে নয়মাত্রার ছন্দই বলব। যথা—

মোর বনে | ওগো গরবী
এলে যদি | পথ ভুলিয়া।

এই উভয় ভাগের ছন্দকেই নয়মাত্রার ছন্দ বলছি, তার কারণ উভয়তই নয়মাত্রার পদে ছন্দের রূপকল্পটি সমাপ্ত, তার পরে পুনরাবর্তন। এই সব-কটি ছন্দেরই সাধারণ পরিচয়, এরা নয়মাত্রার ছন্দ।] আরও বিশেষ পরিচয় দাবি করলে এর কলাসংখ্যা এবং সেই কলার মাত্রাসংখ্যার হিসাব দিতে হয়।

 কোনো কোনো ছন্দে কলাবিভাগ করতে ভুল হবার আশঙ্কা আছে। যেমন— গগনে গরজে মেঘ ঘন বরষা। পয়ারের চোদ্দ মাত্রা থেকে এক মাত্রা হরণ করে এই তের মাত্রার ছন্দ গঠিত। অর্থাৎ ‘গগনে গরজে মেঘ ঘন বরিষন’ এবং এই ছন্দটি বস্তুত এক, এমন মনে হতে পারে। আমি তা স্বীকার করিনে, তার সাক্ষী শুধু কান নয় তালও বটে। এই দুটি ছন্দে তালের ঘা পড়েছে কী রকম তা দেখা উচিত।

 
গগনে গরজে মেঘ | ঘন বরিষন।

সাধারণ পয়ারের নিয়মে এতে দুটি আঘাত।

  
গগনে গরজে মেঘ | ঘন বর- | ষা।

এতে তিনটি আঘাত। পদটি তিন অসমান ভাগে বিভক্ত। পদের শেষবর্ণে স্বতন্ত্র ঝোঁক দিলে তবেই এর ভঙ্গিটাকে রক্ষা করা হয়। ‘বরষা’