পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৮
ছন্দ

অমূল্যবাবু একে দুই চরণ বলেন, আমি বলিনে। এই দুটি ভাগকে নিয়েই ছন্দের সম্পূর্ণতা। যদি এমন হত

সকল বেলা কাটিয়া গেল,
বকুলতলে আসন মেল।

তাহলে নিঃসংশয়ে একে দুই চরণ বলতুম।

 পুনর্বার বলি যে, যে-বিরামস্থলে পৌঁছিয়ে পদ্যছন্দ অনুরূপ ভাগে পুনরাবর্তন করে সেইপর্যন্ত এসে তবেই কোন্‌টা কোন্ ছন্দ এবং তার মাত্রার পরিমাণ কত তার নির্ণয় সম্ভব, মাঝখানে কোনো একটা জোড়ের মুখে গণনা শেষ করা অসংগত। সংস্কৃত বা প্রাকৃত ছন্দশাস্ত্রে এই নিয়মেরই অনুসরণ করা হয়। দৃষ্টান্ত—

পৈঙ্গল-ছন্দঃসূত্রাণি

ভংজিঅ মলঅচোলবই ণিবলিঅ
গংজিঅ গুজ্জরা।
মালবরাঅ মলঅগিরি লুক্কিঅ
পরিহরি কুংজরা।
খুরাসাণ খুহিঅ রণমহ মুহিঅ
লংঘিঅ সাঅরা।
হম্মীর চলিঅ হারব পলিঅ
রিউগণহ কাঅরা।[১]

গ্রন্থকার, বলছেন ‘বিংশত্যক্ষরাণি’ এবং ‘পঞ্চবিংশতিমাত্রাঃ প্রতিপাদং দেয়াঃ’। এর পদে পদে কুড়িটি অক্ষর ও পঁচিশটা মাত্রা, ছন্দের এই পরিচয়।

  1. প্রাকৃতপৈঙ্গলম্, ১।১৫১। এই প্রাকৃত ছন্দটির নাম ‘গগনাঙ্গ’ (প্রাকৃতপৈঙ্গলম্ ১।১৪৯-৫০), মতান্তরে ‘গগনাঙ্গনা’।