পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
ছন্দ

ওরে লালন[১]-ভেড়ের লোকদেখানো 
মুখে হরি হরি বোলা।[২]

আর-একটি

এমন মানব-জনম আর কি হবে। 
যা কর মন ত্বরায় কর
এই ভবে।
অনঅন্তরূপ ছিষ্টি করেন সাঁই,
শুনি মানবের তুলনা কিছুই নাই। 
দেবদেবতাগণ
করে আরাধন
জন্ম নিতে মানবে।•••
এই মানুষে হবে মাধুর্যভজন
তাইতে মানুষ-রূপ গঠিল নিরঞ্জন।
এবার ঠকলে আর
না দেখি কিনার
লালন কয় কাতরভাবে।[৩]

এই ছন্দের ভঙ্গি একঘেয়ে নয়। ছোটো-বড়ো নানাভাগে বাঁকে বাঁকে চলেছে। সাধুপ্রসাধনে মেজে-ঘষে এর শোভা বাড়ানো চলে, আশা করি এমন কথা বলবার সাহস হবে না কারো।

 এই খাঁটি বাংলায় সকল রকম ছন্দেই সকল কাব্যই লেখা সম্ভব এই আমার বিশ্বাস। ব্যঙ্গকবিতায় এ-ভাষার জোর কত ঈশ্বর গুপ্তের

  1. লালনচন্দ্র দাস বা রায়। পরে ইনি লালন শাহ ফকির নামে পরিচিত হন। দ্রষ্টব্য: প্রবাসী ১৩৩২ শ্রাবণ পৃ ৪৯৭, ললিত চট্টোপাধ্যায় ও চারু বন্দ্যোপাধ্যায়-সম্পাদিত ‘বঙ্গবীণা’ পৃ ৪৯৩, মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন-প্রণীত ‘হারামণি’ ভূমিকা পৃ ১৸৹।
  2. এই গান-দুটি রবীন্দ্রনাথকর্তৃক সংগৃহীত ও প্রকাশিত; প্রবাসী ১৩২২ আশ্বিন ও পৌষ। এই পাঠ ও প্রবাসীর পাঠে কিছু পার্থক্য আছে। গ্রন্থপরিচয় দ্রষ্টব্য।
  3. এই গান-দুটি রবীন্দ্রনাথকর্তৃক সংগৃহীত ও প্রকাশিত; প্রবাসী ১৩২২ আশ্বিন ও পৌষ। এই পাঠ ও প্রবাসীর পাঠে কিছু পার্থক্য আছে। গ্রন্থপরিচয় দ্রষ্টব্য।