পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৬
ছন্দ

বলেছেন কলা। যেমন—মেঘ ডাকে | গম্ভীর | গরজনে (পৃ ১০৪), সকল বেলা | কাটিয়া গেল (পৃ ১০২), অন্তর তার | কী বলিতে চায় (পৃ ১০৩) প্রভৃতি দৃষ্টান্তের চার, পাঁচ ও ছয় মাত্রার পর্বকেই তিনি কলা বলে পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কোনো স্থলে উপপর্বকেও বলেছেন কলা। যেমন—শ্রাবণ-গগন, | ঘোর ঘনঘটা (পৃ ১০৫), এ দৃষ্টান্তটা হচ্ছে ‘ষড়ঙ্গী’ এবং রবীন্দ্রনাথের মতেই এর প্রতিকলায় ছয় মাত্রা গণ্য হওয়া উচিত (পৃ ১০০-১০১)। কিন্তু তা না করে তিনি এই দৃষ্টান্তটির প্রতিকলায় গণনা করেছেন তিন মাত্রা, অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে উপপর্বকেই বলেছেন কলা।

 কাওয়ালি—দ্রষ্টব্য ‘তাল’।

 গগনাঙ্গ (পৃ ১০৮)—একটি প্রাকৃত ছন্দ। এ ছন্দের প্রতিপাদে কুড়িটি স্বরান্ত অক্ষর এবং পঁচিশ কলামাত্রা থাকে। মাত্রাস্থাপনের বিশেষ বিধান এই যে, পাদের প্রথমেই থাকবে একটি চতুষ্কল গণ (অর্থাৎ চার কলামাত্রার পর্ব) এবং পাদের শেষ দুটি অক্ষর হবে যথাক্রমে লঘু ও গুরু। অন্যান্য অক্ষরের লঘুত্ব-গুরুত্ব নিয়মিত নয়। যথা—

 | ||
ভংজিঅ | মলঅচোলবই ণিবলিঅ গংজিঅ গুজ্জরা।

 চতুষ্পদ— দ্রষ্টব্য ‘পদ’।

 চরণ—দ্রষ্টব্য ‘পদ’।

 চলন (পৃ ৩৪) — এটি পারিভাষিক শব্দ নয়। রবীন্দ্রনাথ এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন ছন্দপংক্তির বিভাগ অর্থে। এক রকম বিভাগকে বলা যায় পর্ব এবং পর্বের উপবিভাগকে বলা যায় উপপর্ব। চলন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে কখনও পর্ব অর্থে, কথনও উপপর্ব অর্থে। যেমন—

শরদচন্দ | পবন মন্দ | বিপিন ভরল | কুসুমগন্ধ |

এটি হচ্ছে ষড়ঙ্গী অর্থাৎ যন্মাত্রপর্বিক ছন্দ। রবীন্দ্রনাথের মতে এর প্রতিপদক্ষেপে অর্থাৎ চলনে ছয় মাত্রা (পৃ ৩৪)। সুতরাং চলন মানে