পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সংজ্ঞাপরিচয়
২৯১

নয়নে | নিঠুর | চাহনি ||
হৃদয়ে | করুণা | ঢাকা।

‘ঢাকা’র পরে পূর্ণযতি, ‘চাহনি’র পরে অর্ধযতি। বাকি যতিগুলি উপপর্বের পরিচায়ক, সুতরাং উপযতি (পৃ ১০৩)।

অন্তর তার | কী বলিতে চায় | চঞ্চল চর | ণে।

এখানে উপপর্ববিভাগ দেখানো গেল না, কারণ উপযতিগুলি সবই লুপ্ত হয়েছে। বিভাজনচিহ্নগুলি সবই পর্বযতি বা লঘুযতির পরিচায়ক।

 রবীন্দ্রনাথের মতে বাংলা ছন্দে যতি শুধু ছন্দোবিভাজনের কাজেই লাগে না, তাকে কালব্যাপ্তি দিয়ে মাত্রাপুরণের কাজেও লাগানো হয়। ‘সকল ভাষারই যতি আছে, কিন্তু যতিকে বাটখারাস্বরূপ করে ছন্দের ওজনপূরণ বাংলা ছন্দ ছাড়া আর কোনো ছন্দে আছে কি না জানিনে’ (পৃ ১২৬)। কিন্তু ইংরেজি এবং সংস্কৃত ছন্দেও যতির কালব্যাপ্তি তথা মাত্রাপুরণের কাজ আছে বলে তিনি মনে করতেন। O Goddess ইত্যাদি পংক্তিদুটির বিশ্লেষণে তিনি বিরামমাত্রার অস্তিত্ব ধরে নিয়েছেন (পৃ ৩৯)। এই প্রসঙ্গে One more unfortunate এবং When we two parted ইত্যাদি দৃষ্টান্তদুটির বিশ্লেষণও লক্ষিতব্য (পৃ ১৮)। O Wild West Wind ইত্যাদি দৃষ্টান্তটিতেও সিলেব্‌ল্‌মাত্রা গণনার সঙ্গে যতিমাত্রা গণিত হয়েছে (পৃ ৪৬); বস্তুত এটিতে যতিমাত্রা গণনার অবকাশ নেই। সংস্কৃত ছন্দের মধ্যে ‘বদসি যদি কিঞ্চিদপি’ ইত্যাদি দৃষ্টান্তটিতে দুই যতিমাত্রার অবকাশ দেখানো হয়েছে (পৃ ১২৬); অন্যত্র কিন্তু এক যতিমাত্রাই ধরা হয়েছে (পৃ ১৫-১৬)। বলা বাহুল্য দ্বিতীয়টিই স্বীকার্য।

 বলা সংগত যে, যতিমাত্রার স্বাভাবিক স্থান পংক্তির অন্তে। কখনও কখনও পদের অন্তেও যতিমাত্রা দেখা যায়। যেমন—