পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪ ছন্দ

চলে, থামিতে চায় না। তিন মাত্রার ছন্দ সেই চাকার মতো। দুই সংখ্যাটা স্থিতিপ্রবণ, তিন সংখ্যাটা গতিপ্রবণ।

নবীন । কিশোরী । মেঘের। বিজুরী । চমকি। চলিয়া । গেল।

এখানে তিন মাত্রার শবগুলি একটা আরএকটার গায়ের উপর গড়াইয়া পাড়িয়া ঠেলা দিয়া চলিয়াছে, থামানো দায়। অবশেষে একটি দুইমাত্রা আসিয়া তাহাকে ক্ষণকালের জন্য ঠেকাইয়াছে।

দুই মাত্রার সঙ্গে তিনমাত্রার মিলনে অসমমাত্রার ছন্দের উৎপত্তি । ৩+২, ৩+৪, ৫+৪ মাত্রার ছন্দ তাহার দৃষ্টাস্ত।--

৩+২

কাঁপিলে পাতা, নড়িলে পাখি চমকি উঠে চকিত আঁখি।

৩+৪ তরল জলধর বরিখে ঝরঝর অশনি গরগর হাকে।

৫+৪ বচন বলে আধো-আধো, চরণ চলে বাধো-বাধো, নয়ন তলে কাঁদো-কাঁদো চাহনি।

তিন মাত্রার ছন্দের ন্যায় অসমমাত্রার ছন্দও ম্বভাবত চঞ্চল। মাত্রার অসমানতাই তাহাকে কেবল টলাইতে থাকে। প্রত্যেক পদ পরবর্তী পদের উপর ঠেস দিয়া আপনাকে সামলাইতে চেষ্টা করে। বস্তুত তিনমাত্রাও অসমমাত্রা, তাহার উপাদান দুই+এক।

কারণ ছন্দের মূল মাত্রা দুই, তাহা এক নহে। নিয়মিত গতিমাত্রই দুই সংখ্যাকে অবলম্বন করিয়া। তাই স্তম্ভ, যাহা থামিয়া থাকে, তাহা এক হইতে পারে ; কিন্তু জন্তর পা বলো, পাখির পাখা বলো, মাছের পাখনা