পাতা:ছন্দ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৪৫
ছন্দ
৪৫

ছন্দের অর্থ ৪৫

দেখা যাক। এর প্রত্যেক ভাগে কবি ইচ্ছামতো ছোটে! বড়ো নানা ওজনের নানা স্থুর বাজিয়েছেন; কোনে! জায়গাতেই পয্মারকে তার প্রচলিত আড্ডায় এসে থামতে দেননি । প্রথম আরন্ডেই বীরবাহুর বীর- মর্যাদা স্থগম্ভীর হয়ে বাজল-_সন্মুখসমরে পড়ি বীরচূড়ামণি বীরবাছ' ; তার পরে তার অকালমৃত্যার সংবাদটি যেন ভাঙা রণপতাকার মতো! ভাঙা ছন্দে ভেঙে পড়ল-_“চলি যবে গেলা যমপুরে অকালে ; তার পরে ছন্দ নত হয়ে নমস্কার করলে-_“কহ হে দেবি অমৃতভাষিণি, ; তার পরে আসল কথাটা, যেটা সবচেয়ে বড়ো কথা, সমস্ত কাব্যের ঘোর পরিণামের যেটা স্থচনা, সেটা! ষেন আসন্ন ঝটিকার সুদীর্ঘ মেঘগর্জনের মতো! এক দিগন্ত থেকে আরেক দিগন্তে উদ্‌্ঘোষিত হল-_ “কোন্‌ বীরবরে বরি সেনাপতিপদে পাঠাইলা রণে পুনঃ রক্ষঃকুলনিধি রাঘবারি'। বাংলা ভাষায় অধিকাংশ শব্দই ছুই মাত্রার এবং তিন মাত্রার, এবং

ট্রমাত্রিক শব্দের উপর বিভক্তিযোগে চার মাত্রার । পয়ারের পদ- বিভাগটি এমন যে, ছুই, তিন এবং চার মাত্রার শব্দ তাতে সহজেই জায়গা পায়।

চৈত্রের সেতারে বাজে বসন্তবাহীর

বাতাসে বাতাসে ওঠে তরঙ্গ তাহার। এ পয়ারে তিন অক্ষরের ভিড । আবার

চকমকি-ঠোকাঠুকি-আগুনের প্রা, চোখোচৌখি ঘটিতেই হাসি ঠিকরায়।

এই পয়ারে চারের প্রাধান্য । তারাগুলি সারারাঁতি কাঁনে কানে কয়, সেই কথা৷ ফুলে ফুলে ফুটে বনময়। এইখানে ছুই মাত্রার আয়োজন। প্রেমের অমরাবতী প্রেয়সীর প্রাণে, রি কে সেখ! দেবাঁধিপতি সে কথা৷ কে জানে ।