পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদহ ૨8 खून brసె8 সবে দিন-চারেক হল এখানে এসেছি, কিন্তু মনে হচ্ছে যেন কতদিন আছি তার ঠিক নেই। মনে হচ্ছে, আজই যদি কলকাতায় যাই তা হলে যেন অনেক বিষয়ে অনেক পরিবর্তন দেখতে পাব। আমিই কেবল সময়স্রোতের বাইরে একটি জায়গায় স্থির হয়ে আছি ; আর, সমস্ত জগৎ আমার অজ্ঞাতে একটু একটু করে ঠাই বদল করছে। আসলে, কলকাতা থেকে এখানে এলে সময়টা চতুরগুণ দীর্ঘ হয়ে আসে ; কেবল আপনার মনোরাজ্যে বাস করতে হয়, সেখানে ঘড়ি ঠিক চলে না। ভাবের তীব্রতা-অনুসারে মানসিক সময়ের পরিমাপ হয় ; কোনো কোনো ক্ষণিক সুখদুঃখ মনে হয় যেন অনেক ক্ষণ ধরে ভোগ করছি। যেখানে বাইরের লোকপ্রবাহ এবং বাইরের ঘটনা এবং দৈনিক কার্যপরম্পরা আমাদের সর্বদা সময়গণনায় নিযুক্ত না রাখে সেখানে, স্বপ্নের মতে, ছোটো মুহূর্ত দীর্ঘ কালে এবং দীর্ঘ কাল ছোটাে মুহুর্তে সর্বদাই পরিবর্তিত হতে থাকে। তাই আমার মনে হয়, খণ্ড কাল এবং খণ্ড আকাশ আমাদের মনের ভ্রম। প্রত্যেক পরমাণু অসীম এবং প্রত্যেক মুহূর্তই অনন্ত। এ সম্বন্ধে পারস্য উপন্যাসে খুব ছেলেবেলায় একটা গল্প পড়েছিলুম, সেটা আমার ভারী ভালো লেগেছিল এবং তখন যদিও খুব ছোটে ছিলুম তবুও তার ভিতরকার ভাবটা এক রকম করে বুঝতে পেরেছিলুম। কালের পরিমাণটা যে কিছুই নয় সেইটে দেখাবার জন্যে একজন ফকির একটা টবের মধ্যে মন্ত্রঃপূত জল রেখে বাদশাকে বললে, “তুমি এর মধ্যে ডুব দিয়ে স্নান করে r বাদশ ডুব দেব। মাত্র দেখলে সে এক সমুদ্রের ধারে নতুন দেশে গিয়ে উপস্থিত। ૨ S 8