পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিলাইদহ ૨૭ खून 〉brぬ8 আজ সকালে বিছানা থেকে উঠেই দেখি পাংশুবর্ণ মেঘের ভারে আকাশ অন্ধকার এবং অবনত, বাদলার ভিজে হাওয়া দিচ্ছে, টিপ, টিপ করে অবিশ্রাম বৃষ্টি পড়ছে, নদীতে নৌকো বেশি নেই, ধান কাটবার জন্তে কাস্তে হাতে চাষার মাথায় টোকা প’রে গায়ে চট মুড়ি দিয়ে খেয়ানৌকোয় পার হচ্ছে, মাঠে গোরু চরছে না এবং ঘাটে স্বানাথিনী জনপদবধুদের বাহুল্য নেই– অন্যদিন এতক্ষণ আমি তাদের উচ্চকণ্ঠের কলধ্বনি এ পার থেকে শুনতে পেতুম, অাজ সে-সমস্ত কাকলী এবং পাখির গান নীরব। যে দিক থেকে বৃষ্টির ছাট আসবার সম্ভাবনা সে দিককার জানলা এবং পর্দা ফেলে দিয়ে অন্য দিককার জানলা খুলে আমি এত ক্ষণ কাজের প্রত্যাশায় বসে ছিলুম। অবশেষে ক্রমেই আমার ধারণা হচ্ছে, আজ এ বাদলায় আমলার ঘরের বার হবে না— হায়, আমিও শু্যাম নই, তারাও রাধিক নয়— বর্ষাভিসারের এমন সুযোগ মাঠে মারা গেল । তা ছাড়া, বঁাশি যদি বাজাতুম এবং রাধিকার যদি কিছুমাত্র সুরবোধ থাকত তা হলে বৃকভানুনন্দিনী বিশেষ ‘হর্ষিতা হত না । যাই হোক, অবস্থাগতিকে যখন রাধিকাও আসছেন না, আমলারাও তদ্রুপ, এবং আমার Museও সম্প্রতি আমাকে পরিত্যাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছেন, তখন বসে বসে একখণ্ড চিঠি লেখা যেতে পারে। আসল হয়েছে কি, এতক্ষণ কোনো কাজ না থাকাতে নদীর দিকে চেয়ে গুন গুন স্বরে ভৈরবী টােড়ি রামকেলি মিশিয়ে একটা প্রভাতী রাগিণী স্বজন করে আপন-মনে আলাপ করছিলুম, তাতে অকস্মাৎ মনের ভিতরে এমন একটা স্বতীব্র অথচ সুমধুর চাঞ্চল্য জেগে উঠল, ૨છે 8