পাতা:ছিন্নপত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-বিশ্বভারতী.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ইতস্তত টেনেটুনে সেরেস্থরে নিয়ে বেশ ফিট্‌ফাট হয়ে পুরুষটার কাছে উবু হয়ে বসল, তার পরে একটু-আধটু কাজে হাত দিতে লাগল। এরা নিতান্তই মাটির সন্তান, নিতান্তই পৃথিবীর গায়ের সঙ্গে লেগে আছে– যেখানে-সেখানে জন্মাচ্ছে, পথে পথেই । বেড়ে উঠছে এবং যেখানে-সেখানে মরছে ; এদের ঠিক অবস্থাটা, ঠিক মনের ভাবটা ভারি জানতে ইচ্ছে করে। দিনরাত খোলা আকাশে, খোলা বাতাসে, অনাবৃত মৃত্তিকার উপরে এ একরকম নূতন রকমের জীবন, অথচ এরই মধ্যে কাজকর্ম ভালোবাসা ছেলেপুলে ঘরকরন সমস্তই আছে । কেউ যে একদণ্ড কুঁড়ে হয়ে বসে আছে তা দেখলুম না, একটা না একটা কাজে আছেই। যখন হাতের কাজ ফুরোল তখন খপ ক’রে একজন মেয়ে আর-একজন মেয়ের পিঠের কাছে বসে তার ঝুটি খুলে দিয়ে মনোযোগের সঙ্গে উকুন বাছতে আরম্ভ ক’রে দিলে এবং বোধ করি সেই সঙ্গে ঐ ছোটো তিনটে দর্মাছাউনির ঘরকন্ন সম্বন্ধে এক এক ক’রে গল্প জুড়ে দিলে— সেটা আমি এত দূর থেকে ঠিক নিশ্চিত বলতে পারি নে, তবে অনেকটা অনুমান করা যেতে পারে। আজ সকালবেলায় এই নিশ্চিন্ত বেদের পরিবারের মধ্যে একটা বিষম অশান্তি এসে জুটেছিল। তখন বেলা সাড়ে আটটা নটা হবে— রাত্রে শোবার কাথা এবং ছেড়া হ্যাকড়াগুলো বের করে এনে দৰ্মার চালের উপর রোদস্তুরে মেলে দিয়েছে। শুয়োরগুলো বাচ্ছাকাচ্ছা-সমেত সকলে গায়ে গায়ে লাগাও হয়ে একটা গর্তর মতে ক’রে তার মধ্যে মস্ত এক তাল কাদার মতো পড়েছিল, সমস্ত রাত শীতের পর সকাল বেলাকার রোদরে বেশ একটু আরাম বোধ করছিল— হঠাৎ তাদেরই এক-পরিবার-ভুক্ত কুকুর দুটো এসে ঘাড়ের উপর প’ড়ে ঘেউ ঘেউ করে তাদের উঠিয়ে দিলে। বিরক্তির স্বর প্রকাশ ক’রে তারা ছোট-হাজরি-অন্বেষণে ¢ ግ